দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- ডিএ মামলায় রাজ্যের রিভিউ পিটিশনের আর্জি খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। ২০ মে জারি করা নির্দেশ বহাল রাখল হাইকোর্ট। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। ফলে দ্রুত ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্যকে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলায় হাইকোর্টের গত মে মাসে-র নির্দেশ বহাল রাখল। এই নিয়ে তৃতীয় বার রাজ্যের পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ হল আদালতে। রাজ্যের আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ায় রাজ্য সরকারি কর্মীদের পক্ষে গেল রায়। তবে আইনি মহল মনে করছে কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে রাজ্য সরকার।এই মামলার শুনানির সময় রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়, তহবিলে টাকা নেই, সেই কারণে উঁচু হারে ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু রাজ্য সরকারের এই যুক্তি আগেও গ্রহণ করেনি কলকাতা হাইকোর্ট। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে রাজ্যের সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে। এই নিয়ে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। চলতি বছরের মে মাসের ২০ তারিখে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে রাজ্য সরকারকে। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও রাজ্যের তরফে কর্মীদের নিয়ম মেনে ডিএ দেওয়া হয়নি। রাজ্য সরকার নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। পাশাপাশি ৩ মাসের মধ্যে ডিএ না দেওয়ায় আদালত অবমাননা মামলা করে কর্মচারী সংগঠনগুলি। সেই মামলাগুলি দায়েরে ত্রুটি থাকায় এদিন শুনানি হয়নি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৯ নভেম্বর।রায় ঘোষণার পর নিজেদের উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেনননি রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। আদালতেই শুরু হয়ে যায় মিষ্টিমুখ। কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ আইএনটিইউসি-র সভাপতি শ্যামল কুমার মিত্র বলেন,’এই রায় শোষিত রাজ্য সরকারি কর্মীদের কলকাতা হাইকোর্টের পুজো উপহার।’ এরপরই হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, ‘এর আগে ২০ মে রায়ের পর আমরা রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলাম যে, আমরা সমস্তরকম সহযোগিতা করতে রাজি। আপনারা ডিএ মামলার রায় কার্যকর করুন। কিন্তু রাজ্য সরকার কর্মচারীদের সহযোগিতার মনোভাব বোঝেনি। তাই এরপর থেকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সার্বিক বিরোধিতার নীতি বজায় থাকবে। সরকারের সঙ্গে কোনওরকম সহযোগিতা আমরা করব না।’ একইসঙ্গে দাবি আদায়ে দরকার হলে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। অন্যদিকে, বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘ডিএ একজন সরকারি কর্মচারীর আইনসিদ্ধ অধিকার। এটা তাঁর প্রাপ্য। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেস মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।’