নিজস্ব সংবাদদাতা :-বিএসএফের একাংশের মদতে কীভাবে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে গরু পাচার করা হত এদিন তার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে ইডির চার্জশিটে। সিবিআই চার্জশিটে দাবি করা হয়েছিল, এনামূল হক ও তার সহযোগীরা পাচারে বিএসএফের সাহায্য নিয়েছিল। এদিন ইডি তদন্তকারীদের দাবি, একদিকে শুল্ক দফতরের বাজেয়াপ্ত করা গরু কম দামে কিনে নিত এনামূল হকরা। অন্যদিকে ইলামবাজার, হুগলি-সহ একাধিক পশু হাট থেকে গরু সংগ্রহ করত আবদুল লতিফরা। এরপর সেগুলি বিভিন্ন রাস্তা নজরদারিতে পার করে মুর্শিদাবাদাদের ওমরপুরে সোনারবাংলা হোটেলে পৌঁছে দেওয়া। বলা যায় সোনার বাংলা হোটেল ছিল গরু পাচারের মূল কেন্দ্র। সেখান থেকে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত কাছে তাই সেই জায়গাটিকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। পরে রাত ১১টা থেকে ভোর ৩টের মধ্যে গরু পাচার করা হত।চার্জশিটে ইডি দাবি করেছে, জেরায় অনুব্রত জানিয়েছেন, স্ত্রী অধুনাপ্রয়াত ছবি মণ্ডল তাঁর কোনও ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন না। তিনি এবং কন্যা সুকন্যা মিলে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারির ‘গাইডেন্সে’ সমস্ত ব্যবসায়িক ব্যবস্থাপনা সামলাতেন। আর এখানেই বাবা-মেয়ের বয়ানে অসঙ্গতি উঠে এসেছে। ইডির চার্জশিটে সুকন্যা নিজের বয়ানে বলেছেন, তিনি ব্যবসার বিষয়ে কিছুই জানতেন না। তাঁর বাবা তাঁকে যেখানে সই করতে বলতেন, তিনি তা-ই করতেন।চার্জশিটে ইডি আরও জানিয়েছে, অনুব্রত তাঁর বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির উৎসের কথা জানাতে গিয়ে বলেছেন, চালের কারবার এবং জমির দালালি থেকে উপার্জিত অর্থের কথা। কিন্তু তার কোনও নথি দেখাতে পারেননি। অনুব্রত দাবি করেছেন, তাঁর লেনদেন-সহ আয়কর রিটার্ন জমার যাবতীয় বিষয়ে মণীশ সব জানেন।
কিন্তু মণীশকে জেরা করে তদন্তকারীরা ওই টাকার উৎসের কোনও ব্যাখ্যা পাননি। যদিও মণীশ তাঁর বয়ানে তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, সুকন্যাই ব্যবসার বিষয়ে নির্দেশ দিতেন। অনুব্রত এ নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাতেন না। এই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন উঠছে, তা হলে সত্যি কে বলছেন? সত্যিই কি সুকন্যার ভূমিকা কেবল সই করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত, না কি অনুব্রতের বয়ান মতোই বাবাকে সঙ্গে নিয়ে মেয়ে মণীশের ‘গাইডেন্স’ মতো ব্যবসা সামলাতেন? এদিকে ইডি চার্জশিটে জানিয়েছে, দুটি ৫০ লক্ষ টাকার এবং একটি ১ কোটি টাকা মূল্যের লটারির টিকিট কিনেছিলেন অনুব্রত। তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিটে ইডি দাবি করেছে কালো টাকা সাদা করতে জেতা লটারির টিকিট কিনে নিতেন অনুব্রত। বোলপুরের লটারি বিক্রয় কেন্দ্র গাঙ্গুলি লটারি এজন্সির সঙ্গে অনুব্রত বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাধ্যমে বোঝাপড়া করে নিয়েছিলেন। কেউ পুরস্কার পেলেই সেই খবর পৌঁছে যেত অনুব্রতর কাছে। অনুব্রত তাঁর ঘনিষ্ঠ কাউকে দিয়ে পুরস্কার জয়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।