প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- পুজোর আগে বড় উপহার। টালা ব্রিজের উদ্বোধন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’বছরের প্রতীক্ষার অবসান। শেষ পর্যন্ত উত্তর কলকাতার এই লাইফলাইন খুলে দেওয়া হল জন সাধারণের জন্য। ব্রিজের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “পুজোর আগে মানুষের জন্য এটা বড় উপহার রাজ্যের। যান চলাচলের খুবই সুবিধা হবে।”তবে আপাতত টালা সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপাতত ভারী যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। নতুন রূপে টালা সেতু তৈরিতে কত খরচ হয়েছে, এদিনের ভাষণে তাঁরও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এই সেতু তৈরিতে খরচ হয়েছে ৪৬৮ কোটি টাকা ।
টালা ব্রিজের পুনর্গঠনে রেলের ভূমিকার কথা জানাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”৪ মাস ধরে ভাঙার কাজ করেছে রেল। পিডব্লুডি-কে বলেছিলাম, তাড়াতাড়ি কাজ করো। ববি-পুলক-অরূপ সবাই খুব সাহায্য করেছে। এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ। তবে শুনেছি স্থানীয়দের কিছু কিছু সমস্যা আছে। পিডব্লুডিকে বলেছি, ২,৩ মাসের মধ্যে সমস্ত কাজ করে দেবে। এই ব্রিজ তৈরির পুরো টাকা রাজ্য দিয়েছে। ভেবেছিলাম, রেল সোশ্যাল ওয়ার্ক হিসেবে টাকা নেবে না। কিন্তু ৯০ কোটি টাকা নিয়েছে রেল।”এরপরই তিনি মঞ্চে উপস্থিত রেলের ডিআরএমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “এখানে ১৪৫ টি গরিব পরিবার আছে। রেলের এখানে যে জমি আছে, সেটা কিনতে চাই আমরা। সেই জমিতে এঁদের জন্য বাড়ি বানিয়ে দিতে চাই। কারণ, রাজ্যের এখানে আর কোনও জমি নেই। রেলের জমি না পেলে তাঁদের খালের ধারেই বাড়ি বানিয়ে দিতে হবে। রেলের কাছ থেকে আমরা টাকা দিয়ে জমিটা কিনব, টাকাপয়সার কোনও সমস্যা হবে না।” এরপর তিনি ফিরহাদ হাকিমকে বলেন, ”এই ব্যাপারটা দেখো। এর জন্য টাকাপয়সা নিয়ে ভেবো না। এটা গরিব মানুষের কাছে আমার প্রতিজ্ঞা। যা খরচ হয় হোক, ওদের মাথার উপর ছাদ করে দেব আমরা।” এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার পর দেখেছিলাম কী ভাবে বেহালার মানুষ কষ্ট করেছে। আধঘণ্টার রাস্তা ঘুরে ঘুরে চার পাঁচ ঘণ্টা ধরে যেত। ঠিক তেমনই টালা ব্রিজের জন্যও মানুষকে কষ্ট করতে হয়েছে। চারমাস লেগেছিল এই ব্রিজ ভাঙতে সময় লেগেছি। কোভিডের জন্য কিছুটা সমস্যা হয়েছিল কিন্তু, তা সত্ত্বেও অনেক দ্রুত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ব্রিজ নির্মাণ সংস্থার সমস্ত কর্মী, ইঞ্জিনিয়ারদের ধন্যবাদ জানাই। তাঁদের জন্য এত তাড়াতাড়ি ব্রিজ উদ্বোধন করা সম্ভব হল। স্থানীয় মানুষদের কষ্টের কথা আমি উপলব্ধি করেছি।”মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে নতুন এই সেতুটি তৈরি হওয়ায় তা আগের তুলনায় অনেক বেশি মজবুত হয়েছে।