দেবরীনা মণ্ডল সাহা :- তৃণমূলে আবারও একবার তাপস অস্বস্তি। এবার দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই মুখ খুললেন নিউটাউন-রাজারহাটের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। বুধবার সন্ধেয় ইকো পার্কে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়েছিল। সেই বিজয়া সম্মিলনীতে রাজ্য সরকারের একাধিক মন্ত্রী, বিধায়ক আমন্ত্রিত থাকলেও ছিলেন না বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। বুধবার নিউটাউনে মুখ্যমন্ত্রীর বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না পেয়ে বিস্ফোরক রাজারহাট নিউটনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি খুবই মর্মাহত, গতবারও আমাকে জানানো হয়নি। দু’বছর ধরেই দলে আমার কোনও স্টেটাস নেই। ২ বছর ধরে আমায় বিজয়া সম্মিলনীতে ডাকা হয় না। দলে একটা চাকরশ্রেণি আর আরেকটা বাবুশ্রেণি। দলে আমার স্টেটাসটা চাকরশ্রেণির। চাকরদের সম্মান জানিয়ে বলছি, আমি চিরকাল শ্রমজীবী মানুষদের হয়ে লড়াই করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাঁরা ২০২১-এ সাম্প্রদায়িকতাকে সমর্থন করেছিলেন। দিদিকে বেগম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন। তাঁরা নানান কারণে স্থান পেয়ে যান। স্থান পান না আমার মত লোকেরা। একুশের বিধানসভা ভোটে আমি ৫৬ হাজার ভোটে জিতি। নিউটাউনের ইতিহাসে কেউ কখনও এত ভোটে জিততে পারেনি। ৩৯ বছর ধরে আমি রাজারহাটে জনপ্রতিনিধিত্ব করছি। ৪৬ বছর হয়ে গেল আমার রাজনীতিতে। সেখানে দাঁড়িয়ে আমি সম্মানটাই চাই। কিন্তু আমার কোনও কথা বলার সুযোগ নেই। কীভাবে কথা বলতে হয় দলে, আমার জানা নেই। সিপিআইএম থেকে আসায় যদি আমার সততা নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকে, তাহলে আমার কিছু করার নেই। কিন্তু দলের কোনও কর্মী বলতে পারবে না যে তাপস চট্টোপাধ্যায়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন আছে।’তাঁর আরও দাবি, তাঁকে অবহেলা করা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অজান্তেই এ সব হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর আক্ষেপ, অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলারই সুযোগ পান না তিনি। বলেন, ‘দু বছর ধরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের অ্যাপয়েন্টমেন্ট চাইছি, পাচ্ছি না। অ্যাপয়েন্টমেন্ট করার কী পদ্ধতি আছে, তা আমার জানা নেই।’এপ্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘কোথাও কোনও অভিমান থাকতে পারে। সেটা বলার নির্দিষ্ট জায়গা আছে। তাপসবাবু আমাদের দলের একজন বিধায়ক ও দক্ষ সংগঠক। এই নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। অভিমান-ই প্রমাণ করে যে দুটো মানুষের মধ্যে ভাব-ভালোবাসা কতটা গভীর। তৃণমূল কংগ্রেস একটা পরিবার।’ পাশাপাশি, তিনি আরও বলেন, ‘একটা বড় কর্মকাণ্ডে ছোটখাটো কোনও ঘটনা ঘটতে পারে। কোথাও পদ্ধতিগত ত্রুটি হয়ে থাকতে পারে।’