প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- শুভেন্দু অধিকারী পরিবার ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার রামচন্দ্র পণ্ডার বিরুদ্ধে ‘ভুয়ো মামলা’ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তার তদন্তে নেমে এবার মামলাকারী কাকলি পণ্ডার স্বামী তথা কাঁথি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার শান্তনু পণ্ডাকে তলব করল সিবিআই। আজ, বুধবার শান্তনু পণ্ডাকে নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠানো হয়েছে। এই তলবের কারণ কাকলি পণ্ডা কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে বলেছিলেন, ‘প্রভাবশালীরা আমাকে মিথ্যে মামলা করতে চাপ দিয়েছিল।’ এবার সেই প্রভাবশালীদের নাম জানতেই শান্তনুকে সিবিআই তলব করেছে বলে সূত্রের খবর। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া টেন্ডার দুর্নীতির তদন্তভার আগেই সিবিআইকে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে কন্টাই থানার আইসিকে তলব করেছিল সিবিআই।ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে কাঁথি পুরসভায় ঠিকাদারি করার অভিযোগ তুলে অধিকারী পরিবার ঘনিষ্ঠ রামচন্দ্র পণ্ডার বিরুদ্ধে কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কাকলি। তবে অভিযোগপত্র থানায় জমা করেন শান্তনু। তার জেরে ঘটনায় রামচন্দ্রকে গ্রেফতার করে কাঁথি থানার পুলিশ। পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হয়। তখন কলকাতা হাইকোর্টের দরজায় কড়া নাড়েন ওই ঠিকাদার। তাঁর অভিযোগ, মিথ্যা মামলায় তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। বিচারপতি তখন কাকলিকে আদালতে ডেকে পাঠান। কাকলি আদালতে জানান, কয়েকজন প্রভাবশালী চাপ দিয়ে মিথ্যা মামলা তাঁকে দিয়ে করিয়েছেন। তিনি প্রাণ সংশয়ে ভুগছেন। আদালত কাকলিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সুরক্ষা দিতে নির্দেশ দেয়। আর গোটা ঘটনার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে।প্রসঙ্গত, গত ২৮ ডিসেম্বর ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে কাঁথি পুরসভায় ঠিকাদারি করার অভিযোগে অধিকারী পরিবার ঘনিষ্ঠ রামচন্দ্র পণ্ডার বিরুদ্ধে কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কাকলী। তাঁর অভিযোগপত্রটি থানায় জমা করে আসেন শান্তনু। ওই ঘটনায় রামচন্দ্রকে গ্রেফতার করে কাঁথি থানার পুলিশ। পরে তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পাল্টা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই ঠিকাদার।
তাঁর অভিযোগ, তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। ঘটনাক্রমে বিচারপতি অভিযোগকারী কাকলীকে আদালতে ডেকে পাঠান। কাকলী আবার আদালতে জানান, কয়েক জন প্রভাবশালীর চাপে তিনি এই মিথ্যা মামলা রুজু করেছেন। তিনি প্রাণ সংশয়ে ভুগছেন বলেও আদালতে জানান। এর পরেই আদালত কাকলীকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সুরক্ষা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই সঙ্গে গোটা ঘটনার তদন্তভার তুলে দেয় সিবিআইয়ের হাতে।রামচন্দ্রবাবু মুক্তি পাওয়ার পর সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাকে শুভেন্দু অধিকারীর নাম নিতে মারাত্মক চাপ দেওয়া হয়েছে। কলকাতা থেকে আধিকারিকরা এসে টেবিলে রিভলভার রেখে আমাকে জেরা করেছেন। নিরাপত্তারক্ষী বন্দুক দিয়ে আমার পেটে খোঁচা দিয়েছে। কলকাতার আধিকারিকরা হুমকি দিয়েছেন, শুভেন্দুর নাম না বললে ৩ বছর জেলে ভরে রেখে দেব।’ এখন সিবিআই সূত্রে খবর, প্রভাবশালীদের জড়িত থাকার যে দাবি করেছিলেন কাকলি, তাঁদের কারও নাম তিনি জানাননি। সেই তথ্য জানতেই শান্তনুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।