দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে ধৃত তাপস মণ্ডল, কুন্তল ঘোষ এবং নীলাদ্রি ঘোষকে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। সোমবার তিনজনকে সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। সোমবার মানিক-ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল, কুন্তল ঘোষ এবং নীলাদ্রি ঘোষকে সিবিআই হেফাজতে পাঠানোর পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কৌশিক ঘোষ, শেখ আলি ইমাম, আবদুল খালেক, শাহিদ ইমামকে দু’মাস পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। উল্লেখ্য রবিবার মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। ওইদিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা গ্রেফতার করেছেন নীলাদ্রি ঘোষকে। তবে কুন্তল ঘোষকে আগেই গ্রেফতার করেছিলেন তদন্তকারীরা।সোমবার তাপস মণ্ডল ও নীলাদ্রি ঘোষকে যখন আদালতে আনা হয়। সেই সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাপস মণ্ডল দাবি করেন তিনি টাকা নেননি বলে। তাঁর দাবি, কুন্তল ঘোষকে টাকা দেওয়া হয়েছে, সেটাই আমি বলেছি সিবিআই-ইডি’কে। অন্যদিকে আদালতে প্রবেশের সময় কুন্তল ঘোষ বলেন, ‘আমার অভিযোগ সত্যি হল, জেনে খুশি হলাম।’এদিন আদালতে সিবিআই জানায়, জেরায় কুন্তল জানিয়েছেন, তাঁর কাছে ঘুষ চেয়েছিলেন তাপস মণ্ডল। সেই টাকা দিতে অস্বীকার করায় কুন্তলের শিশুসন্তানকে অপহরণের হুমকি দিয়েছিলেন তাপস মণ্ডল। ওদিকে কুন্তল তাঁর কাছ থেকে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন বলে প্রমাণ দিতে পেরেছেন তাপস মণ্ডল। বাকি টাকা কুন্তল নিয়েছেন বলে লোকমুখে শুনেছেন বলে জানিয়েছেন তাপস।এদিকে, তাপস মণ্ডলও গ্রেপ্তারির কারণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, “তদন্তের স্বার্থে পুলিশ হেফাজতের প্রয়োজন হয়। তবে আমি যদি তদন্তে সাহায্য করি তাহলে প্রয়োজনীয়তা কী হেফাজতে নেওয়ার? পালিয়ে যাওয়ার কোথাও নেই।
আমি সরকারি কর্মী। কোথাও যাব না। চারবার ডেকেছিল সিবিআই নিজাম প্যালেসে। জল, মিষ্টি খাইয়ে নিশ্চয়ই বাড়ি পাঠিয়ে দেবে না। এখন ১৬১ জবানবন্দি পেয়ে সেটা দেখিয়ে গ্রেপ্তার করা হল। সুবিচার দিন হুজুর।”আরেক ধৃত নীলাদ্রি ঘোষের আইনজীবীও একই প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “আমাকে এই একই মামলায় তিনবার ডাকা হল। সিবিআই দাবি করছে তাপস মণ্ডল ও কুন্তল ঘোষের মাঝে মিডলম্যান হিসেবে কাজ করেছে নীলাদ্রি। উনি সাধারণ ব্যবসায়ী। তাঁদের পরিচিত। আমাদের চলার পথে অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ হয়, তাই বলে কি আমি অপরাধ করব? ওঁর বিরুদ্ধে এফআইআর নেই। গোটা চার্জশিটেও নাম নেই। তা সত্ত্বেও নোটিস দিয়ে হাজিরা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার? মশা মারতে কামান ডাকছে সিবিআই। যেকোনো কাউকে ডেকে গ্রেপ্তার করছে।”ওদিকে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সিবিআই শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে হেফাজতে নিতে না চাওয়ায় প্রশ্ন তুলেছে আদালত। এদিন বিচারক প্রশ্ন করেন, কেস ডায়েরিতে দেখা যাচ্ছে সবাই শান্তিপ্রসাদকে টাকা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তাহলে তাঁকে কেন হেফাজতে নিচ্ছেন না। জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, শান্তিপ্রসাদকে হেফাজতে নিতে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ সংগ্রহের কাজ চলছে। এর পর বিচারক বলেন, আপনারা তো পনির ছাড়া পনির বাটার মশলা রান্না করার চেষ্টা করছেন দেখছি।