প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :-নতুন করে মারাত্মক উদ্বেগ তৈরি করছে অ্যাডিনোভাইরাস। চলতি মরসুমে জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে রবিবার পর্যন্ত রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১ জন শিশুর। শহর থেকে জেলা, কোথাও কোনও হাসপাতালে শিশুরোগ বিভাগের সাধারণ শয্যা থেকে পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিকু) ফাঁকা নেই। এমনকি, সময়বিশেষে খালি থাকছে না ভেন্টিলেটরও। মূলত বড়দের থেকে এই রোগ ছড়াচ্ছে বলেই দাবি চিকিৎসকদের। চিকিৎসকরা আরও জানাচ্ছেন, শিশুদের ফুসফুস ও শ্বাসনালি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই অ্যাডিনোভাইরাসে। শুধু তাই নয়, সাধারণ মরশুমি সর্দি-কাশি শ্বাসকষ্টে বদলে যেতে দু’দিনও সময় লাগছে না। জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত শিশুদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলার প্রতিটি হাসপাতালকে রাত ১২টা থেকে পরের দিন রাত ১২টা, মোট ২৪ ঘণ্টার হিসেব স্বাস্থ্য দফতরের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এবং ইমেলে পাঠাতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, একবার শীত আর একবার গরমের দাপটে সর্দি কাশি বাড়ছিল।
ফলে একে সিজন চেঞ্জ করার জন্য এই জ্বর-সর্দি কাশি হচ্ছে বলেই মানুষ ভেবেছিল। কিন্তু তার পরেই জানা যায়, এটি একটি ভাইরাস, যার নাম অ্যাডিনোভাইরাস। তবে এই ভাইরাস শুধু শিশুদের আক্রমণ করছে তাই নয়, বড়রাও আক্রান্ত হচ্ছে। জানা গেছে, কলকাতায় ১১টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ফুলবাগানের বি সি রায় শিশু হাসপাতালে পাঁচটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে৷ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের৷ পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথেও মৃত্যু হয়েছে তিনটি শিশুর৷ এদের প্রায় সবারই বয়স ২ বছরের নীচে৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রে আক্রান্ত শিশুরা শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল৷চিকিৎসকরা ইতিমধ্যেই দিয়েছেন কোভিড বিধি মেনে চলার পরামর্শ। এর আগে কখনও এতটা বাড়েনি অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণ। সম্ভবত ভাইরাসটি জিন বদল করেছে। সেকারণে এটি ভয়াবহ আকার নিয়েছে বলেই মত চিকিৎসকদের একাংশের। করোনাবিধির মতই সব কিছু মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতরও। সর্দি-কাশি-জ্বর হলে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ। ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। জ্বর-শ্বাসকষ্ট বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যাবে না।