দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :-নবান্ন অভিযান সফল করতে মরিয়া বঙ্গের গেরুয়া শিবির। ঝড়বৃষ্টি, জমা জল উপেক্ষা করেই রাত থেকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে জমায়েত হচ্ছেন বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা। হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশনে ভোরে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা ট্রেনগুলির যাত্রী সংখ্যার বেশিরভাগই এসেছেন নবান্ন অভিযানে যোগ দিতে। আর সেই কড়াকড়িতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে হাওড়ার গতি। কলকাতামুখী আমজনতা চূড়ান্ত হয়রানির মুখে। কেননা বন্ধ হয়েছে বাস চলাচল। বন্ধ হয়েছে রাস্তা।বিজেপির নবান্ন অভিযান ঠেকাতে বিশাল বাহিনী তৈরি পুলিশ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই হাওড়া শহরের বিভিন্ন প্রান্ত কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। বিভিন্ন রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত দ্বিতীয় হুগলি সেতু বা বিদ্যাসাগর সেতু এবং দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত হাওড়া ব্রিজ বা রবীন্দ্র সেতু বন্ধ থাকবে। ভোর ৪টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শহরে মালবাহী গাড়ি ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সকাল ১১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত এনসি স্ট্রিট এবং কলেজ স্ট্রিটে যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে। বিকল্প পথ হিসাবে লেনিন সরণি, মৌলালি হয়ে এজেসি বোস রোড ধরে এগোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে। দুপুর ১২টা থেকে বিজেপির কর্মসূচি শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্ট্র্যান্ড রোড এবং উত্তর অভিমুখে কিংসওয়ে মোড় পর্যন্ত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ১২টার পরে হাওড়ার দিকে ফোরশোর রোড, আন্দুল রোড বন্ধ থাকবে সাধারণের যাতায়াতের জন্য। মিছিল শুরুর ঘণ্টা দুয়েক আগে থেকেই ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে আসা হাওড়া এবং কলকাতামুখী সব গাড়ি হাওড়া-আমতা রোড ও নিবেদিতা সেতু বা বালি ব্রিজের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।নবান্ন অভিযানকারী গেরুয়া শিবিরকে সামলাতে প্রায় ১০০ জন অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছেন তিনজন আইজিপি অফিসার – রাজেশ কুমার যাদব, নিশাত পারভেজ ও সুনীল কুমার চৌধুরী। পাশাপাশি রশিদ মুনির খান, রণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, অলোক রাজোরিয়া ও সুমনজিৎ রায়ের মত চারজন ডিআইজি ।
নিরাপত্তা ব্যবস্থায় থাকছেন ১৮ জন ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিক। এ ছাড়াও ৩২ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার, ৬২ জন ইনস্পেক্টর থাকছেন। শহরের নানা প্রান্ত থেকে নবান্নমুখী বিজেপির মিছিল ঠেকাতে ৫টি জলকামান রাখা হচ্ছে। থাকছে দু’টি বজ্র। এ ছাড়াও গোটা পরিস্থিতি ড্রোনে নজরদারি চালানো হবে। নবান্নের আশপাশে পাঁচ কিলোমিটার এলাকা কার্যত দুর্গে পরিণত করেছে পুলিশ। হাওড়া সেতু, হাওড়া ময়দান চত্বর এবং সাঁতরাগাছি স্টেশন সংলগ্ন কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে তৈরি করা হয়েছে ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড। বাঁকুড়া থেকে ঝাড়গ্রাম সর্বত্রই পুলিশের বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে।