দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :-‘মরেই যাব। আমাকে বাঁচতে দিন।’ বলতে বলতে আদালতে কেঁদে ভাসালেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ।শুক্রবার পার্থ হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন আলিপুর আদালতে। শুনানির পর তাঁকে আদালতকক্ষ থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কোর্ট লকআপে। পুলিশি ঘেরাটোপে একটি সরু করিডর দিয়ে পার্থকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই সময় তাঁকে ঘিরে ধরে সংবাদমাধ্যম এবং আইনজীবীদের ভিড়। ধাক্কাধাক্কি এবং ভিড়ের চাপে আর্তনাদ করে ওঠেন পার্থ। চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘‘মরে যাব, আমি মরে যাব, আমাকে বেরোতে দিন!’’এর পর ভিড় ঠেলে পুলিশ পার্থকে নিয়ে কোর্ট লকআপে নিয়ে চলে যায়। পার্থের সঙ্গে কোর্ট লকআপে নিয়ে যাওয়া হয় মধ্যশিক্ষা পর্যদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।আদালতেও কেঁদেকেটে জামিনের জন্য কাতর আবেদন করেন তিনি। জেল থেকে একটি খাতা এনেছিলেন তিনি। সেখানে একেবারে পয়েন্ট লেখা ছিল বলে খবর। বিচারকের সামনে একেবারে ফলাও করে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার জানিয়ে দেন, আমি এমবিএ, ডক্টরেট, রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র। পাশাপাশি পরিবারের কে কতটা উচ্চশিক্ষিত সেকথাও তিনি জানান। এর সঙ্গেই তিনি জানিয়ে দেন, ২৮টি ওষুধ খাই। খুব অসুস্থ। পাশাপাশি এসএসসি নামক স্বয়ংশাসিত সংস্থার ক্ষেত্রে তাঁর যে কোনও ভূমিকা নেই একথাও জানিয়ে দেন তিনি |শুনানি শেষে শুক্রবার আদালতকক্ষ থেকে বেরোতেই পার্থকে দেখে ‘চোর চোর’ স্লোগান ওঠে। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ দুপুর ১২টা নাগাদ আলিপুর আদালতে হাজিরা দেন। এর পর দুপুর ২টো নাগাদ তিনি যখন আদালত থেকে বেরোচ্ছেন, সেই সময় চত্বর জুড়ে ওঠে ‘চোর চোর’ চিৎকার | ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া পার্থকে এ বার নিজেদের হেফাজতে নিতে চায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এসএসসি নিয়োগে ‘দুর্নীতি’তে মূল অভিযুক্ত আসলে পার্থ। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় তারা। এমনটাই সিবিআই সূত্রে খবর।এদিকে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের আইনজীবী বলেন, “ওনার স্ত্রী ডা. বিচিত্রা গঙ্গোপাধ্যায়। উনি প্রফেসর ছিলেন। পরবর্তীতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি হন। ওনার এতে কোনও যোগ নেই।” আদালতের তরফে বলা হয়, বেআইনি নিয়োগ পত্রে সই ছিল কল্যাণময়বাবুরই। সেই প্রসঙ্গে প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতির আইনজীবী বলেন, ”২০১৮ সালের পর থেকে যাবতীয় সই স্ক্যান করে ব্যবহার করা হয়। ফলে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় আদৌ গোটা বিষয়ে কিছু জানতেন কি না, সেটাই প্রমাণ সাপেক্ষ।”