দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- আবাস যোজনায় অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। তারপরই রাজ্যে এসেছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। দুটি জেলায় সরেজমিনে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এসেছিলেন। তারপর রিপোর্ট পেশ করেছেন কেন্দ্রে। বাংলার ১০টি জেলায় আবাস-পরিস্থিতি ঘুরে দেখার জন্য আবার পাঁচ-পাঁচটি অনুসন্ধানী দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের প্রশাসনিক মহল সূত্রে অবশ্য অভিযোগ, অনুমোদন মিলেছে, বাড়ি তৈরির সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, অথচ বরাদ্দের বদলে আসছে নতুন দল! ফলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির কাজ শুরুই করতে পারেনি রাজ্য সরকার।গত সপ্তাহেই রাজ্যের দুই জেলায় আবাসে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এসেছিল কেন্দ্রীয় দল। দুই জেলাতেই দফায় দফায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাদের। সেই দুই কেন্দ্রীয় দল ফিরে যাওয়ার পরই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একপ্রকার হুঁশিয়ারির সুরে বলেছিলেন, আগামী এক সপ্তাহে রাজ্যে আসবে আরও ১৫টি দল। শুভেন্দুর সেই হুঁশিয়ারির পরই কেন্দ্রের দল পাঠানোর সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কেন্দ্রের রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে বলে আশঙ্কা করছে শাসক শিবির।আবার কেন্দ্রীয় দল আসছে বাংলায়। এই প্রকল্পে বাড়ির কাজ কেমন হচ্ছে সেটাই খতিয়ে দেখতে আসছেন তাঁরা। কয়েকদিন আগে পূর্ব মেদিনীপুর এবং মালদায় বাড়ির কাজ দেখতে দু’টি টিম পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। এবার যে দল আসছে তারা বাংলার ১০টি জেলা ঘুরে দেখবে। এই বিষয়টি চিঠিতে উল্লেখ করে নবান্নকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও আবাস যোজনা নিয়ে চূড়ান্ত সতর্কের মধ্যে কাজ করছে রাজ্য সরকার। প্রতিটি জেলায় পৌঁছে গিয়েছে নির্দেশ।নবান্ন সূত্রে খবর, মোট ১০টি জেলায় কেন্দ্রীয় দল যাবে। এই জেলাগুলি হল— কালিম্পং, দার্জিলিং, মালদা, মুর্শিদাবাদ, দুই মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, নদিয়া, আলিপুরদুয়ার এবং পূর্ব বর্ধমান। এখানে উত্তরবঙ্গের চারটি জেলা রয়েছে। তাই বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় দলের জন্য সবরকম ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। সহযোগিতায় ত্রুটি রাখা হবে না।
এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কী রিপোর্ট দেন তাঁর উপরই নির্ভর করছে পরবর্তী কিস্তির টাকা।কেন্দ্রীয় দল জেলাগুলি ঘুরে দেখে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে রিপোর্ট দেবেন। তবে ঘনঘন রাজ্যে কেন্দ্রীয় দল পাঠানোকে অনেকে ভাল চোখে দেখছেন না। গ্রামে গৃহহীনদের বাড়ি তৈরির জন্য সরকার টাকা দেয়। কেন্দ্রীয় সরকার দেয় ৬০ শতাংশ টাকা। বাকি ৪০ শতাংশ দেয় রাজ্য। কেন্দ্র–রাজ্য মিলিত প্রয়াসে এই প্রকল্প চললেও তার পোশাকি নাম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)। সম্প্রতি এই প্রকল্পে কেন্দ্র ৮২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তারপর রাজ্যের আরও সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা জুড়ে বাংলায় ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার বাড়ি তৈরি হবে।