দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- হাম ও রুবেলা দূর করতে টিকাকরণে জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। ৯ জানুয়ারি থেকেই শুরু হয়েছে শিশু ও কিশোরদের হাম ও রুবেলার প্রতিষেধক দেওয়া। ‘ন ‘ মাস বয়স থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত সকলকেই হাম রুবেলার টিকা দেওয়ার কাজ চলছে। এই বয়সের প্রায় ৮৫ শতাংশ ছেলে মেয়েরাই স্কুলে থাকে। সেই কারণে স্কুলে স্কুলে ক্যাম্প করে টিকা করণের কাজ চলছে। কিন্তু সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতর থেকে একটি পরিসংখ্যান সামনে এসেছে, তাতে উঠে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেখা যাচ্ছে, বেসরকারি স্কুলের টিকাকরণে অসহযোগিতা করছে। সূত্রের খবর, কলকাতার অন্তত ১১৭টি বেসরকারি স্কুল টিকাকরণ কর্মসূচিতে অংশ নেয়নি। রাজ্য এখনও পর্যন্ত প্রায় ১.৪ কোটি শিশুকে হাম রুবেলার টিকা দেওয়া হয়েছে। ২.৩ কোটি শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। গোটা রাজ্যের নিরিখে শতকরা ৬০ শতাংশ এই টিকাদান সম্পন্ন হলেও কলকাতায় সেই হার হল ৫০ শতাংশ। প্রায় ৬ লক্ষ শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে কলকাতায়। যেসমস্ত স্কুল টিকাদানে সম্মতি দেয়নি সেগুলি হল–সেন্ট জেমস এবং প্র্যাট মেমোরিয়াল ইত্যাদি স্কুল। ওই সমস্ত স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে রাজ্য। সেন্ট জেমসের অধ্যক্ষ টি আয়ারল্যান্ড বলেছেন, ‘এখন স্কুলে পরীক্ষা চলছে, দ্রুত বোর্ড পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে। তাই আমরা এখন টিকাদানে অংশ নিতে চাইছি না। পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে আমরা এনিয়ে ভাবব।’ প্র্যাট মেমোরিয়াল কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, তাদের স্কুলে এখন বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলছে। আবার কিছু স্কুল দাবি করেছে, অভিভাবকরা টিকাদানে ইচ্ছুক নন। আবার সেন্ট লরেন্সের মতো অনেক বেসরকারি স্কুল এই টিকাদান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ‘আমাদের স্কুলের ১,৬৪৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১,২২২ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে।’সার্ভিস ডক্টর ফোরামের সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, “রাজ্যে ১০০ শতাংশ শিশু ও কিশোরকে রুবেলা ভ্যাক্সিন দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি সব স্কুল কর্তৃপক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতা একাধিক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে। সরকারি স্কুলগুলির তরফে যে নথি পাঠানো হচ্ছে, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, তার থেকে অনেকটাই কম ছেলেমেয়েদের টিকা দেওয়া হয়েছে।”স্বাস্থ্য দফতরের তরফে যে পরিসংখ্যান সম্প্রতি সামনে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ৯ জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ৯৮, ০১৬ সেশন হয়েছে। টোটাল টার্গেট ২৩,২৯৫, ৭৪৫।
এখনও পর্যন্ত মোট ১.৩৭ কোটি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী,যে পাঁচটি জেলা টিকাকরণের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে, সেগুলি ক্রমান্বয়ে, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি, মালদা, পূর্ব বর্ধমান। পাঁচটি জেলা যেগুলি টিকাকরণের ক্ষেত্রে কাজের নিরিখে এগিয়ে রয়েছে, সেগুলি, উত্তর দিনাজপুর, নন্দীগ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর ও উত্তর ২৪ পরগনা।