দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- রাজ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাস । অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণের হার নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে নাইসেড। সেই রিপোর্ট সামনে আসতে চিন্তার ভাঁজ স্বাস্থ্যকর্তাদের কপালে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে ও মোকাবিলায় শনিবার জরুরি বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা।জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় নতুন করে গাইডলাইন জারি করা হয়েছে। অ্যাডিনো ভাইরাস মূলত ছোটদের উপরই আক্রমণ করছে। তাই তাদের চিকিৎসায় বিশেষ সতর্কতার কথা জানানো হয়েছে।তিনদিনের বেশি সময় ধরে জ্বর থাকলে, মাথাব্যথা, পেটখারাপ হলে চিকিৎসা আবশ্যক। সাধারণত জ্বর-কাশি, গলাব্যথার পাশাপাশি পেট খারাপ, বমি হয়ে থাকে এই ভাইরাসের আক্রমণে। এই অসুস্থতা বেশিদিন থাকলে টাইফয়েড, কোভিড কিংবা ডেঙ্গু হতে পারে। তাই চিকিৎসককে দেখিয়ে দ্রুত সুস্থ হওয়া প্রয়োজন।নাইসেড যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সেখানে বলা হয়েছে, গত দেড় মাসে ৫০০-র বেশি নমুনা পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। মূলত রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে এই নমুনা পাঠানো হয়েছিল। সেই নমুনাগুলি পরীক্ষা করার পর জানা গিয়েছে, ৫০০ নমুনার মধ্যে ৩২% অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত। ১২ % রাইনো ভাইরাসে আক্রান্ত এবং ১৩ %-এর শরীরে প্যারা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত শিশু বলে জানা গিয়েছে। আইসিইউ-তে ভর্তি অধিকাংশের বয়স ১-২ বছর। মূলত শিশুদের ইমিউনিটি পাওয়ার কম হওয়ায় তারা সহজে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর বিচ্ছিন্ন থাকার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। একইসঙ্গে হ্যান্ড স্যানিটাইজারও ব্যবহার করতে হবে। করোনার ক্ষেত্রে যে সমস্ত প্রাথমিক সতর্কতা মেনে চলা হতো, এক্ষেত্রেও সেই ব্যবস্থা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।এই মুহূর্তে কলকাতায় বি সি রায় শিশু হাসপাতালে শিশুদের ওয়ার্ডে অধিকাংশ বেড ভর্তি, ক্রিটিক্যাল ওয়ার্ড ভর্তি, এসএনসিইউর অধিকাংশ ভর্তি। এছাড়া বেসরকারি হাসপাতালগুলির যেখানে শিশুদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড রয়েছে সেখানে অধিকাংশ বেড জ্বরে আক্রান্ত শিশুতে ভর্তি। আক্রান্তদের অনেককেই ক্রিটিক্যাল কেয়ার, কাউকে ভেন্টিলেশনে পর্যন্ত ভর্তি রাখতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এখনওপর্যন্ত অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণে ৬টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সবেমিলিয়ে পরিস্থিতি যথেষ্টই চিন্তার। স্বাস্থ্য়কর্তারা যেটা বলছেন, কলকাতা, হাওড়া ও শরহতলি এলাকায় অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও উচ্চরবঙ্গের কিছু জায়গাতেও এর সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে।