দেবরীনা মণ্ডল সাহা :-পাহাড়ে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি বনধের ডাক দিয়েছে হামরো পার্টি ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বনধের রাস্তায় মোর্চা। মাধ্যমিক পরীক্ষা যেদিন শুরু হচ্ছে সেদিনই পাহাড়ে বনধের ডাক মোর্চার। এবার সেই বনধের বিরুদ্ধে শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের সভা থেকে কড়া হুঁশিয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের | ৬ বছর পর বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির অনুষ্ঠান থেকে বঙ্গভঙ্গ ও বন্ধের বিরোধিতায় গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর স্পষ্ট বার্তা,”কেউ যদি মনে করে, বন্ধ করে ক্ষমতা দেখাবে, তাহলে আমি পরিস্কার বলে যাচ্ছি, কোনও বন্ধ হবে না।” একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ, “কোনও বঙ্গভঙ্গ হবে না। যারা ভঙ্গের চেষ্টা করবে তাঁদের মোহভঙ্গ হবে। অশান্তি আমি হতে দেব না, এটা আমার চ্যালেঞ্জ।”মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিনই পাহাড়ে ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডাকা হয়েছে । তবে জরুরি পরিষেবা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্কুলবাসকে ছাড় দেবে তারা। তবু চিন্তার মেঘ কাটেনি পরীক্ষার্থীদের। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধের বিরোধিতা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে দিলেন, রাজ্য সরকার বন্ধের সমর্থন করে না। তাঁর কথায়, “কেউ-কেউ মনে করে, বছরে একবার বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনের জন্য। আমরা কোনও বন্ধ করতে দিই না। বাংলা থেকে বন্ধ উঠে গিয়েছে। মনে রাখবেন, বাংলাকে খোলা রাখতে হবে। তবেই কর্মসংস্থান হবে, উন্নয়ন হবে।” এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “কেউ যদি পরীক্ষা দিতে না পারে সেই দায়িত্ব কে নেবেন?”বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব পাশ হয়েছে। এর বিরোধিতায় সরব পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি। অভিযোগ, তাঁদের ইন্ধন দিচ্ছে বিজেপি। বঙ্গভঙ্গ নিয়ে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে মমতার স্পষ্ট বার্তা,”পাহাড়ে মাঝে মধ্যে কেউ কেউ জাগে। উন্নয়নের জন্য জাগে না। বন্ধের জন্য জাগে ।
কোনও বঙ্গভঙ্গ হবে না।” পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ নির্দেশ, “২৩ তারিখ থেকে পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। কেউ যদি বঙ্গভঙ্গ নিয়ে আন্দোলন করেন, আইন মেনে করবেন। কেউ আইন নিজের হাতে নিলে, সে যেই করুক না কেন, প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।” পাহাড়ের বঞ্চনা নিয়ে ‘কুৎসা’ করা হচ্ছে বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর প্রশ্ন, “কী হয়নি পাহাড়ে? কোন উন্নয়ন বাকি আছে? কেউ কেউ বলেন, পাহাড়ে কিচ্ছু হয়নি। সবটাই কুৎসা।” একইসঙ্গে তাঁর বার্তা, “দক্ষিণবঙ্গ আর উত্তরবঙ্গ আলাদা নয়,একটাই বঙ্গ, পশ্চিমবঙ্গ।”পাহাড়ের বনধকে ঘিরে এবার একেবারে কড়া হুঁশিয়ারি মমতার। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এর আগেও পাহাড়ে দাঁড়িয়ে মমতা জানিয়ে দিয়েছিলেন, আমি রাফ অ্যান্ড টাফও হতে পারি। বিমল গুরুংয়ের সামনে দাঁড়িয়েই সেদিন মমতার রুদ্র রূপ দেখেছিলেন পাহাড়বাসী। এবার ফের শিলিগুড়ির মাটিতে দাঁড়িয়ে পাহাড়ের বনধের বিরুদ্ধে সরকারের কড়া অবস্থান ঘোষণা করে দিলেন মমতা।