দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- বিচার বিভাগের ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যেপাধ্যায়। গতকালই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রয়োজন মনে হলে ইডি বা সিবিআই তৃণমূল সাংসদকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পারে বলে জানিয়েছিলেন বিচারপতি। তাঁর ওই মন্তব্যের ঠিক পরের দিনেই বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিচার বিভাগের ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্ক বাড়ালেন।নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার কুন্তল ঘোষ একটি চিঠি লিখেছেন আদালতের উদ্দেশে। আর তা নিয়ে কড়া পর্যবেক্ষণ শুনিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, এই ঘটনায় দরকারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে ইডি–সিবিআই। আজ, শুক্রবার এই বিষয়ে কড়া ভাষায় সতর্ক করে দিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।আজ, শুক্রবার ১৪ এপ্রিল বাবাসাহেব আম্বেদকরের জন্মদিবস। এখানে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সংবিধানপ্রণেতার মূর্তিতে মালা দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের কাজ প্রশাসনের করা উচিত। বিচারবিভাগের কাজ বিচারবিভাগের করা উচিত। কেউ যদি মনে করেন আমি কারও থেকে সুপিরিয়র, সেই দৃষ্টিভঙ্গি যদি কারও থাকে আমার মতে সেটা বাঞ্ছনীয় নয়। আদালত যদি মনে করে আমরা সব ব্যাপারে সুপ্রিম, আমার মনে হয় সেটা গণতন্ত্রের পক্ষে ভাল হবে না। ত্রুটিবিচ্যুতি হলে নিশ্চয়ই আদালাত দেখবে। কিন্তু আদালত যেন নিজেকে সুপ্রিম না মনে করে।’গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছিলেন।
কুণাল ঘোষ গতকালই টুইটে লিখেছিলেন, ”যেভাবে কোনো ক্ষেত্রে বিচারপতির আসনের অপব্যবহার করে রাজনীতি করা হচ্ছে, বিরোধীদের অক্সিজেন দিতে নিজের উইশ লিস্ট বলা হচ্ছে, নিজেকে ব্যক্তি প্রচারে হিরো সাজানোর চেষ্টা চলছে, তাতে বিচারব্যবস্থার সম্মান ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। ওই চেয়ারটা ছেড়ে সরাসরি রাজনীতিতে আসুন।”তবে এদিন স্পিকার আক্রমণ না করলেও সতর্ক করে দিলেন। তবে তিনি কারও নাম মুখে আনেননি। বরং তাঁর কথায়, ‘হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত ক্ষমতা আছে। তারা সেই ক্ষমতার অনুশীলনও করতে পারে। কিন্তু দেখতে হবে মানুষের কাছে যাতে ভুল বার্তা না যায়। মানুষের যাতে মনে না হয় আদালত একটা পক্ষ নিয়ে চলছে। সংবাদপত্র খুললেই তো দেখছি সব বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ।’