দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- পয়লা বৈশাখ থেকে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে গেল রাজভবনের দরজা। সেজন্য রাজভবনকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের আগে শনিবার সকালে বাংলা ভাষায় রাজ্যবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেইসঙ্গে তাঁর বার্তা, বাংলায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। নিজের গৌরব ফিরে পাবে বাংলা।নববর্ষে আমজনতার জন্য খুলল রাজভবনের দরজা। শনিবার থেকে শুরু হেরিটেজ ওয়াক। কলকাতা মিউজিয়ামের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছে হেরিটেজ ওয়াক। অংশ নিয়েছেন একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। হেরিটেজ ওয়াকের আগে এদিন সকালে এনসিসির সাইকেল ব়্যালি এবং শান্তি মিছিলের সূচনা করেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। শান্তির বার্তা দেন তিনি। বিকেলে রাজভবনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।এদিন সকালে রাজ্যপাল বলেন, “শুভ নববর্ষ।” শান্তির বার্তাও দেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, “যুবসমাজ জানে। যুবসমাজ পারে। যুবশক্তি জেগে উঠেছে। তারাই দেশ এবং মানুষকে চালনা করবে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এই মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। আমার একটাই আরজি। দয়া করে পৃথিবীতে শান্তি আনুন। দয়া করে বাংলায় শান্তি আনুন। দয়া করে দেশে শান্তি আনুন।” তিনি আরও বলেন, “নববর্ষে বাংলা নতুন করে জেগে উঠেছে। যুবশক্তি এখন উন্মুক্ত। যুবরা দেখবেন শান্তি এবং সম্প্রীতি ফিরে এসেছে। বাংলা তার সব গৌরব ফিরে পাবে। সকলের মঙ্গল কামনা করি।”নির্ধারিত সময়মতো সকাল সাড়ে ১০টায় ‘জন রাজভবনে’র দরজা খোলে। মোট ৩০ জন এদিন হেরিটেজ ওয়াকে অংশ নেন। ছিলেন একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। প্রতি শনিবার বিকেলে সাড়ে চারটে থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত রাজভবনের দরজা খোলা থাকবে। প্রথমদিকে কয়েক সপ্তাহ আমন্ত্রিতরাই শুধুমাত্র ঢুকতে পারবেন রাজভবনে। পরে যদিও রাজভবনের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে বুকিং করতে হবে আমজনতাকে।
প্রতি হেরিটেজ ওয়াকে অংশ নিতে পারবেন ৩০ থেকে ৩৫ জন।গত ২৯ মার্চ তাঁর উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে রাজভবনের চাবি তুলে নেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে আমজনতার জন্য ‘জন রাজভবন’-র (আমজনতার জন্য রাজভবনের দরজা খুলে যাওয়ায় সেই নাম দেওয়া হয়েছে) দরজা খুলে দেওয়া হচ্ছে। সেজন্য সাজিয়ে তোলা হয়েছে রাজভবনকে। তারপর থেকে রাজভবনের ভিতরে এবং বাইরে হেঁটে দেখতে পারবেন সাধারণ মানুষ। এতদিন যে কালো রেলিঙের ফাঁক থেকে যে রাজভবনকে দেখতে হত মানুষকে, সেই রাজভবনের মধ্যেই করা যাবে ‘হেরিটেজ ওয়াক’।রাজভবনের হেরিটেজ ওয়াকে অংশগ্রহণকারীরা প্রথমেই দেখতে পাবেন চাইনিজ ক্যানন। এরপর নানা দেশের স্থাপত্য দিয়ে সাজানো নর্থ, সাউথ এবং সেন্ট্রাল মার্বেল হলে ঢুকতে পারবেন আমজনতা। সেখান থেকে ঘুরে লাইব্রেরিতে ঢুকতে পারবেন হেরিটেজ ওয়াকে অংশগ্রহণকারীরা। বইপ্রেমীদের এমন অনবদ্য সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। সবুজ গাছগাছালিতে ভরা রাজভবনে মাঠে হাঁটতেও পারবেন কিছুক্ষণ। বাগানে থাকা দু’টি লেক, ব্রিজ দেখতে পাবেন সবই। এছাড়াও দেখতে পাবেন ‘রয়্যাল কোট অফ আর্মস’।