দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :-২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে তপ্ত হয়ে উঠেছিল দাড়িভিট স্কুল । স্কুলে অঙ্ক ও বিজ্ঞানের শিক্ষকের বদলে কেন সংস্কৃত ও উর্দুর শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে শুরু হয়েছিল বিক্ষোভ-আন্দোলন। সেই আন্দোলন চলাকালীন গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে সেই মামলার শুনানির পর এবার দাড়িভিট স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে বিতর্কে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিল আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছেন। সেই দিন দাড়িভিটের ঘটনায় বোমাও ফেটেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।দাড়িভিট স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের বিতর্কে আন্দোলনে নেমে গুলিবিদ্ধ হন দুই প্রাক্তন ছাত্র। এই মৃত্যুর ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিল আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বুধবার অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেন। এখানে বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগ আগেই উঠেছিল। তাই এনআইএ তদন্তের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্যের নির্দেশও দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।২০১৮ সালে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুল। সেকানে অবরোধ থেকে ইট–পাথর ছোড়া এবং বোমা–গুলিও চলে বলে অভিযোগ। আর তার জেরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মণ নামে দুই প্রাক্তন ছাত্রের। তখনই ছাত্র মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবি তোলা হয়। আজ, বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, দুই যুবকের মৃত্যুর তদন্ত সঠিক পথে এগোয়নি। ওই ঘটনার পরে সিআইডি তদন্তভার নেয়। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, কোনও শক্তিশালী আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়া হয়। যা সিআইডি এখনও কোন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল তা শনাক্ত করতে পারেনি। তাতে বেশ ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট।এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। এই ঘটনা থেকে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন নিজেদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রেখেছে বলেও মন্তব্য করেছে উচ্চ–আদালত। এমনকী রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা নিয়ে আদালতের মন্তব্য, ‘দূর থেকে গোটা ঘটনাক্রম দেখছেন। তাঁরা জেলাশাসক, পুলিশ সুপারকে এতটাই ভরসা করে যে তাঁদের থেকে রিপোর্ট চেয়েই দায়িত্ব সেড়েছে। এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।’ অন্যদিকে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে কলকাতা হাইকোর্ট। সেদিন উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কেন উপরের দিকে গুলি ছোড়েনি পুলিশ?প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এই তদন্তের প্রক্রিয়ায় ত্রুটি রয়েছে বলে মনে করেন বিচারপতি। এইসব কারণে গোটা ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকী অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।