দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে বিজেপি এবং কংগ্রেস হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। মোট পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে মামলা করা হয়েছিল উচ্চ আদালতে। এই আবহে সেই মামলার জরুরি শুনানি হয় আজ। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই বড় পর্যবেক্ষণ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। উল্লেখ্য, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা এর আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিলেন। সেখানে জানানো হয়েছিল যে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য মাত্র ৫ দিন মিলবে। তবে হাইকোর্টের তরফে আজ জানিয়ে দেওয়া হল, মাত্র পাঁচদিনে মনোনয়ন জমা দেওয়া সম্ভব নয়। এই প্রক্রিয়ার জন্য মেয়াদ আরও বাড়ানো উচিত বলে পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের। পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করা হবে কি না, সে বিষয়ে রাজ্য সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। এদিকে বিজেপি এবং কংগ্রেসের তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আর্জিও জানানো হয় আদালতে। এর প্রেক্ষিতে হাই কোর্ট জানায়, নির্বাচনে বাহিনী মোতায়েন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকারই। অপরদিকে পঞ্চায়েতের জন্য ৯ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত মনোনয়ন পেশ করার সময় দেওয়া হয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে। এর প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পেশ করার জন্য যে সময় দেওয়া হয়েছে, তা পর্যাপ্ত নয়।পঞ্চায়েত ভোটে প্রায় ৭৫ হাজার আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য ৫ দিন সময় কম বলে মনে করছে কলকাতা হাই কোর্ট। শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে মনোনয়ন থেকে ভোটগ্রহণ পুরো সময়টি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে করা হয়েছে। মনোনয়নে সময় খুবই কম দেওয়া হয়েছে। ভোটের নির্ঘণ্ট নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা উচিত। মহকুমাশাসক, জেলাশাসক বা কমিশনের অফিসে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায় কি না দেখতে হবে।’’
আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। অন্যদিকে, রাজ্যের বক্তব্য, ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গেলে আদালত নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না।হাই কোর্টের নির্দেশ, এই বিষয়গুলি নিয়ে কমিশনকে নিজেদের বক্তব্য জানাতে হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে রাজ্য। ভোটগ্রহণ থেকে গণনা, গোটা প্রক্রিয়া সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারিতে করা ভাল। চুক্তিভিত্তিক কর্মী বা সিভিক ভলান্টিয়ারদের পঞ্চায়েত ভোটে ব্যবহার করা নিয়ে আদালতের কোনও নির্দেশ থাকলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তা মেনে চলতে হবে বলেও শুক্রবার জানিয়েছে প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ। প্রসঙ্গত, ভোট সংক্রান্ত কোন কোন কাজে সিভিকদের ব্যবহার করা যাবে, তা নিয়ে এর আগে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার একটি নির্দেশ ছিল। কমিশনকে ওই নির্দেশ মেনে পদক্ষেপ করতে বলেছে কলকাতা হাই কোর্ট।প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘নির্বাচন বন্ধ করার জন্য এই মামলাগুলি দায়ের হয়নি, শান্তিপূর্ণভাবে যাতে ভোট হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে কমিশনকে।’ নির্বাচনে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজে লাগানোর বিষয়ে সম্ভবত আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সেটাও কমিশনকে মাথায় রাখার কথা বলেছেন তিনি।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal