প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- খোদ শহরের বুকে জল অপচয় বেড়েছে বলে অভিযোগ। রাস্তার ধারে লাগানো এল আকৃতির স্ট্যান্ড পোস্ট কলগুলি থেকে ক্রমশ জল পড়ে যায়। সেটা দেখেও অনেকে বন্ধ করে না বলে অভিযোগ। আর তার জেরে অপচয় হয় বিপুল পরিমাণ জলের। অথচ এই জল এত প্রয়োজনীয় যে তা সঞ্চয় করে রাখার কথা বলছেন বিজ্ঞানীরা। রাস্তার পানীয় জলের কল থেকে জল পড়ে নষ্ট হওয়ার খবর পৌঁছেছে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কানে। তাই এবার রাস্তার স্ট্যান্ড পোস্ট কলগুলি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। এই লোহার কলগুলি থেকে নাগাড়ে বেরিয়ে যাওয়ায় শহরে দৈনিক জল অপচয়ের পরিমাণ ৩৬ কোটি লিটারের বেশি।তা নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ মেয়র ফিরহাদ হাকিম । তিনি জানিয়েছেন, শহরের স্ট্যান্ড পোস্ট কলগুলো বন্ধ করা হচ্ছে। পুরসভার হিসেব অনুযায়ী শহরে এখনও কয়েক হাজার এমন স্ট্যান্ড পোস্ট কল রয়েছে। এ ধরনের কলের জল দিয়ে অনেকে গাড়িও ধুচ্ছেন।মেয়র জানিয়েছেন, শহরে ওয়াটার ট্যাক্স বা জলকর যেহেতু নেওয়া হয় না তাই এক শ্রেণির মানুষ এ বিষয়ে উদাসীন। বিদ্যুৎ বাঁচাতে তাঁরা আলো-পাখা বন্ধ করেন। কিন্তু জল ভরার পর রাস্তার কলটা আর বন্ধ করছেন না। শুধু তাই নয়, একাধিক এলাকায় এ ধরনের কলে স্টপকক লাগানোর পরেও অনেকে তা ব্যবহার করছেন না। মেয়র জানিয়েছেন, যে সমস্ত এলাকায় কলে স্টপকক ব্যবহার হয় না, সেখানে ফেরুলের সাইজ ছোট করে দেওয়া হবে। মেয়র জানিয়েছেন, কোথায় কোথায় স্ট্যান্ডপোস্ট প্রয়োজন তা শহর ঘুরে দেখবে পুরসভার কর্মীরা। যে সমস্ত এলাকায় পানীয় জল পর্যাপ্ত সেখানে স্ট্যান্ড পোস্ট কলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।রাস্তার স্ট্যান্ড পোস্ট কলগুলি থেকে জল পড়ে অপচয় হচ্ছে বলে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে নালিশ করেন কিছু মানুষজন। তারপর তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পথে নামান কলকাতা পুরসভার কর্মীদের। তাঁদেরও অভিযোগ একই। এই বাজারে জল অপচয় হচ্ছে শুনে বেজায় চটে যান মেয়র বলে সূত্রের খবর। তখনই তিনি জানান, শহরের স্ট্যান্ড পোস্ট কলগুলিকে বন্ধ করা হবে। কারণ পরিশোধিত জল তৈরি করা হয় নষ্টের জন্য নয়। মাথাপিছু ১৮ লিটার পরিশোধিত পানীয় জল তৈরি হয় কলকাতায়। তাই আর স্ট্যান্ড পোস্ট কলের প্রয়োজন নেই। কলকাতা শহরে এখনও কয়েক হাজার এমন স্ট্যান্ড পোস্ট কল রয়েছে। এই কলের জলে অনেকে গাড়ি ধুয়ে নেন। আবার অনেকে বাড়ির জিনিসপত্র পরিষ্কার করেন।এবার থেকে এসব আর চলবে না বলে কলকাতা পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই স্ট্যান্ড পোস্ট কল তুলে দেওয়া হবে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই অনেকে আপত্তি তুলে সেটার প্রয়োজনীয়তা জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভাকে। তাই যেখানে এখনও স্ট্যান্ড পোস্ট কলের সত্যিই প্রয়োজন সেখানে ‘ট্যাপ’ লাগিয়ে দেওয়া হবে। এই ‘ট্যাপ’ লাগিয়ে দিলে জলের প্রেশার কম থাকায় অপচয়ও কম হবে। বালতি ভরতে দু’মিনিট বেশি সময় লাগবে। আর এরপর যদি তাতে কেউ রাগ দেখিয়ে কল ভেঙে দেয় তাহলে সেখানের লাইন সম্পূর্ণ কেটে দেওয়া হবে।