দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- শিশু পাচার চক্রের তদন্ত শুরু করে কলকাতায় অন্তত ১০০ ‘সারোগেটেড’ মায়ের সন্ধান পেল পুলিশ। সন্ধান মিলল চক্রের আরও কয়েকজন সদস্যা তথা এজেন্টেরও। এই ব্যাপারে প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে পাচার চক্রের এক মাথা মমতা পাত্রকে নিয়ে শুক্রবার পূর্ব কলকাতার আনন্দপুরের একটি ক্লিনিক তথা আইভিএফ সেন্টারে তল্লাশি চালালেন আনন্দপুর থানার আধিকারিকরা।আনন্দপুরে বাচ্চা বিক্রি চক্রের তদন্তে নেমে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল কলকাতা পুলিশের হাতে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, কলকাতা ও জেলার অন্তত ১০০ মহিলা এই চক্রে কাজ করেন। এদের গর্ভ ভাড়া নিয়ে IVF সেন্টার থেকে বিক্রি করা হয় সদ্যোজাতদের। এই চক্রে কারা কারা গর্ভ ভাড়া দিয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করছেন তদন্তকারীরা।বাচ্চা বিক্রি চক্রের অন্যতম পান্ডা মমতা পাত্রকে জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, রূপালী মণ্ডলের মতো আরও অনন্ত ১০০ মহিলা এই IVF সেন্টারে গর্ভ ভাড়া দেন। অনেকে ডিম্বানু দাতা হিসাবে ও গর্ভ ভাড়া দেওয়ার ২টি কাজই করে থাকেন। জেলায় জেলায় হতদরিদ্র মহিলাদের ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে গর্ভ ভাড়া দেওয়ার টোপ দেওয়া হয়। শিশু ভূমিষ্ঠ হলে তার ওপরে গর্ভ ভাড়া দেওয়া মায়ের আর কোনও অধিকার থাকে না। শিশুটিকে লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয় নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে।বছর কয়েক আগেই দেশে গর্ভ ভাড়া দেওয়ার নীতিমালা প্রণয়ন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই বিধি মেনে গর্ভ ভাড়া দেওয়া হয়েছে কি না তা জানতে তদন্ত চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা। তদন্তকারীদের কাছে ধৃত মমতা পাত্র জানিয়েছেন, তিনিও IVF সেন্টারে গর্ভ ভাড়া দেন। সপ্তাহখানেক আগেই তাঁর গর্ভের সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে। এই চক্রে চিকিৎসকদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। গর্ভ ভাড়া দিয়ে যে শিশুবিক্রি চক্র চলছে তা জেনেই তাঁরা মহিলাদের গর্ভে ভ্রুণ প্রতিস্থাপন করতেন কি না তার পাকা প্রমাণ জোগাড়ের চেষ্টা রয়েছে পুলিশ।বেআইনিভাবে মহিলা গর্ভ ভাড়া দিলে তার জন্ম দেওয়া শিশুটি পাচার হয়েছে বলেই ধরে নেওয়া হবে। সেই ক্ষেত্রে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal