প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- খাস কলকাতায় বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে বিজেপি নেতার বাড়ির একাংশ বলে অভিযোগ। যদিও ওই অংশটি বেআইনি বলেও পাল্টা অভিযোগ রয়েছে। উত্তর কলকাতার স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক এবং কাউন্সিলরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিজেপি। বিডন স্ট্রিটে বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হয় বিজেপি নেতা সুনীল সিংয়ের বাড়ির একাংশ। আর এই ঘটনা নিয়ে কলকাতা পুরসভায় বিজেপি–তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের মধ্যে মারপিঠ পর্যন্ত হয়ে গেল। ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়ে কলকাতা পুরসভা ভবন। শনিবারের পুর অধিবেশন তপ্ত হয়ে উঠেছে। পুরসভায় তৃণমূল কাউন্সিলরদের সঙ্গে কার্যত হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কাউন্সিলররা। বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দিয়ে হামলা চালায় বিজেপি। পাল্টা বিজেপির দাবি, তৃণমূল কাউন্সিলরেরাই জবরদস্তি মারধর করেন তাঁদের।
বাঁচাতে এসে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা আক্রান্ত হন।কলকাতা পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা স্থানীয় বিজেপি নেতা সুনীল সিংহের অভিযোগ, তাঁর বাড়িতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বুলডোজ়ার চালিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত কলকাতা পুরসভা। যদিও পুরসভার দাবি, বাড়িতে নয়, বাড়ির বেআইনি অংশ বুলডোজ়ার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তা নিয়েই শনিবার পুর অধিবেশনে সরব হন বিজেপির কাউন্সিলরেরা। অধিবেশনের শেষ প্রান্তে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষ বিষয়টি তোলেন। কিন্তু চেয়ারপার্সন মালা রায় তাঁকে জানান, অধিবেশনে এই নিয়ে আলোচনা করা যায় না। প্রয়োজনে মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি। তখন সজল ঘোষ পাল্টা মানবিকতার খাতিরে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে কোনও নাগরিকের বাড়ি ভেঙে দেওয়া যায় না। দয়া করে মানবিকতার খাতিরে বিষয়টি দেখুন।’’ অধিবেশনে এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বিজেপি কাউন্সিলরদের সঙ্গে চেম্বারে কথা বলবেন বলে জানান।অধিবেশন শেষ হতেই বিজেপি কাউন্সিলররা কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলার ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক শুরু করে দেন। সেখানে বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় ওঝা, মীনাদেবী পুরোহিত এবং সজল ঘোষের পাশাপাশি, হাজির ছিলেন অভিযোগকারী সুনীল সিংহ। তার পর দু’পক্ষের কার্যত ধস্তাধস্তি বেধে যায়। খবর পেয়ে ছুটে আসে কলকাতা পুলিশ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘক্ষণ ধরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকার পর ধীরে ধীরে কলকাতা পুলিশের হস্তক্ষেপে গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।