দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- সম্প্রতি ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করা হয়েছে রাজভবনে। বিজেপির ইন্ধনে তা পালিত হয় বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। আর ওই দিনটি নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে যথেষ্ট বিতর্ক তৈরি হয়। এমনকী এটা না করার জন্য খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি লিখে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে সতর্ক করেন। যদিও তিনি তাতে সাড়া না দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করেন। এবার এই পশ্চিমবঙ্গ দিবস হোক একটি নির্দিষ্ট তারিখে বলে প্রস্তাব এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে সেটা কখনওই বিজেপির পছন্দের ২০ জুন নয়। এবার বিধানসভায় সেই প্রস্তাব দেওয়া হল বলে খবর।বিকল্প দিন ঠিক করতে আলোচনা চাইল সরকার। সেই আলোচনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস নির্ধারণ কমিটি’ তৈরি করে দিয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় । শুক্রবার তাদের প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে। সোমবার আরেক দফায় আলোচনা হওয়ার কথা। সূত্রের খবর, তার পরই ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালনের জন্য রাজ্যপালের বিরুদ্ধে চলতি অধিবেশনে ১৮৫ ধারায় প্রস্তাব আনবে সরকারপক্ষ।
অধ্যক্ষের আহ্বানে এদিন বৈঠকে বসেছিলেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিম, শিউলি সাহারা। আলোচনায় তিনটি বিকল্প দিনের কথা এসেছে। ব্রাত্য যেমন বলেছেন, ১ বৈশাখ বাংলা বছর শুরুর প্রথম দিন হোক পশ্চিমবঙ্গ দিবস। ফিরহাদ ২৮ মে তারিখটি উল্লেখ করেছেন। রাজ্যের নাম ‘বঙ্গ’ বা ‘বাংলা’ হিসাবে তুলে ধরে বিধানসভায় প্রস্তাব আনা হয়েছিল ওই তারিখে। শিউলি সাহার আবার প্রস্তাব দিনটি হোক দেশের স্বাধীনতা দিবস অর্থাৎ ১৫ আগস্ট। ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ নিয়ে ভাগাভাগির রাজনীতির অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে বরাবরের। দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসাবে ২০ জুন তারিখটিকে বারবার তুলে ধরতে চেয়েছে বিজেপি। ১৯৪৭ সালের এই দিনে মূলত, রাজ্য বিধানসভায় ভোটাভুটির মাধ্যমে অবিভক্ত বাংলাকে ভাগ করার সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ে। ইতিহাসবিদদের বড় অংশ মনে করেন ওই দিনটি তাই বাংলার মানুষের কাছে লজ্জার, দুঃখের। শাসকদলও বাংলার মানুষের আবেগকে গুরুত্ব দিতে চেয়েছে।অন্যদিকে এই স্পর্শকাতর বিষয়ে কোনও বিতর্ক বা ভেদাভেদ চায় না সরকার। তাই বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রস্তাব আনবে সরকার। সূত্রের খবর, ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালনের জন্য রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে চলতি অধিবেশনে ১৮৫ ধারায় প্রস্তাব আনবে সরকারপক্ষ। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছিল। রাজ্যপাল যেভাবে শিক্ষা–সহ নানা বিষয়ে রাজ্য সরকারের দফতর, মন্ত্রীকে বাদ দিয়ে এককভাবে চলছেন তার জন্য প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত হয়। এবার সেটাই বাস্তবায়িত হতে চলেছে। তার সঙ্গে জুড়ে যাবে এই পশ্চিমবঙ্গ দিবস।