দেবরীনা মণ্ডল সাহা,কলকাতা :- কলকাতা পুরসভা ডেঙ্গি দমনে ভেক্টর কন্ট্রোলের জন্য বরাদ্দ করেছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। সামগ্রিকভাবে এই বরাদ্দ কোনও ছোট পুরসভার বরাদ্দের সমান। তা সত্ত্বেও কলকাতায় ডেঙ্গি কেন বাড়ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, এই সব লোকদেখানো ছাড়া আর কিছুই নয়। বিরোধীদের অভিযোগ, এইসব মিথ্যাচার, ডেঙ্গি দমনে এত উপকরণ থাকা সত্ত্বেও কেন কলকাতায় ডেঙ্গি মহামারী আকার নেয়?মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) তথা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বহু বার দাবি করেছেন, ‘‘মশা দমনে কলকাতা পুরসভার যা পরিকাঠামো আছে, তা অন্য কোনও পুরসভার নেই।’’ বিরোধীদের প্রশ্ন, ঘটা করে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা কি স্রেফ লোক দেখানো? তাঁদের অভিযোগ, এ তো ‘মিথ্যাচার’ ছাড়া আর কিছুই নয়। এত উপকরণ হাতের কাছে থাকা সত্ত্বেও ডেঙ্গি পরিস্থিতি কী ভাবে মহামারির আকার নেয়?প্রসঙ্গত, কলকাতা ভেক্টর কন্ট্রোল বিভাগের জন্য ৩২ টি গাড়ি রয়েছে। ৪ জন ভেক্টর কন্ট্রোল অফিসার রয়েছেন। তাছাড়া প্রতিটি বরোতে ‘র্যাপিড অ্যাকশন টিম’ রয়েছে। ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ দাবি করেছেন, কলকাতা পুরসভায় ভেক্টর কন্ট্রোলে যে উপকরণ রয়েছে তা অন্য কোনও পুরসভায় নেই। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ডেঙ্গি আক্রান্তের নিরিখে উত্তর ২৪ পরগনার পরেই স্থান হল কলকাতার। যার মধ্যে ১০ নম্বর বরোয় সবচেয়ে ভয়াবহ আকার নিয়েছে ডেঙ্গি। ইতিমধ্যে কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে ৫ জন ১০ নম্বর বরোর বাসিন্দা। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রতিবছর ডেঙ্গি মহামারী আকার নিচ্ছে কলকাতায় অথচ প্রতিটি বরো এলাকায় যে ভেক্টর কন্ট্রোল বিভাগ রয়েছে তারা আলাদা ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাদের মতে, যে বরো এলাকায় সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গি হচ্ছে সেই বরো এলাকার জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। প্রসঙ্গত, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে কলকাতা পুরসভায় ছুটির দিনে ৪১ টি ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্র খুলে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই ওয়ার্ডগুলিতে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আলাদাভাবে নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, ওই ওয়ার্ডের পরিত্যক্ত বাড়িগুলিতে আবর্জনা জমে থাকে। সেগুলি পরিষ্কার করা হয় না। ১০ এবং ১২ নম্বর বরো এলাকার জন্য আলাদাভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক। বিরোধীদের মতে, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে পুরসভার ভেক্টর কন্ট্রোল বিভাগকে আরও সক্রিয় হতে হবে।