দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- মঙ্গলবার বিধানসভায় ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল’ (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধনী বিল, ২০২৪) পেশ করেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। এ কারণে দুদিনের বিশেষ অধিবেশনের ডাক দেওয়া হয়েছিল। বিল পেশের পর আলোচনা শেষে বিরোধীরা সমর্থন করায় সর্বসম্মতিক্রমে তা পাশ হয়ে যায়। বিরোধী বিধায়করা এনিয়ে সংশোধনী প্রস্তাব আলোচনার পর মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে ওঠেন। আজকের দিন অর্থাৎ ৩ সেপ্টেম্বর দিনটি রাজ্যের মহিলা বাহিনীর জন্য ‘ঐতিহাসিক দিন’ বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তিনি এই দিনটিতেই রাষ্ট্রসংঘের (United Nations)ইতিহাসের কথাও মনে করালেন, যে ইতিহাস নারী সুরক্ষার জন্য রচিত হয়েছিল। এর পর মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে শোনা গেল নজরুলের কবিতা।কী আছে এই খসড়া বিলে? মূল কয়েকটি তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শাস্তি আরও কঠোরতর করতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারাগুলিকে সংশোধন করা হয়েছে বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, নতুন বিলের তিনটি তাৎপর্য রয়েছে। বর্ধিত শাস্তি, দ্রুত তদন্ত ও দ্রুত ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘নতুন আইন সুনিশ্চিত করবে, যৌন নির্যাতনে কঠোরতম শাস্তি যাতে হয়। ন্যায় সংহিতায় শাস্তির কথা বলা আছে। তবে আমাদের আইনে তা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
পরিবর্তনগুলি একে একে উল্লেখ করেন মমতা-
ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ক্ষেত্রে: ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ১০ থেকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের কথা বলা আছে, ক্ষেত্র বিশেষে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। অপরাজিতা বিলে বলা হয়েছে, এই অন্যায়ের ক্ষেত্রে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ডের শাস্তি, অপরাধ গুরুতর হলে মৃত্যুদণ্ড।
নির্যাতিতার মৃত্যু হলে: ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় শাস্তির কথা বলা আছে- ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ক্ষেত্র বিশেষে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। বাংলার নতুন অপরাজিতা বিলে সেই শাস্তি বাড়িয়ে করা হয়েছে প্রাণদণ্ড ও জরিমানা।
অ্যাসিড আক্রমণের ক্ষেত্রে: ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় শাস্তি হিসেবে বলা আছে, ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ক্ষেত্র বিশেষে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা। বাংলার নয়া বিলে বলা হয়েছে, অ্যাসিড হামলায় অপরাধীর আমৃত্যু কারাদণ্ড, ক্ষেত্র বিশেষে প্রাণদণ্ডের শাস্তি হবে।