দেবাশীষ পাল, মালদহ :- মা কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু করেছিলেন মুসলিম মহিলা শেফালি বেওয়া | তাঁরই উদ্যোগে দশকের পর দশক ধরে জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে মালদহের হবিবপুরের কেন্দুয়ার এই কালীপুজোর| পুজোকে কেন্দ্র করে সম্প্রীতির নজির গড়েছেন হবিবপুরের শেফালী বেওয়া | তাঁর এই উদ্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছেন এলাকাবাসীও|
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছর ৩৫ আগে শেফালি বেওয়া এক কঠিন অসুখে পড়েছিলেন | কোনও চিকিৎসকই রোগ নির্ণয় করতে পারেননি| এমন সময় মা কালী তাঁর স্বপ্নে আসেন এবং বলেন তাঁর পুজো করলে কঠিন অসুখ থেকে সেরে উঠবেন শেফালি | কিন্ত সেই স্বপ্নাদেশের কথা পাড়া-প্রতিবেশীকে বললে প্রথমে কেউ বিশ্বাস করতে চায়নি | মুসলিম মহিলা হয়ে কালীপুজো করবেন, তা কেউ মেনে নিতেও পারেনি | উল্টে গ্রামজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে | এরই মধ্যে একদিন শেফালির শরীরে মা কালী ভর করেন | যা দেখে রীতিমতো শিউড়ে ওঠে গ্রামবাসী | এরপরই পুজোর ছাড়পত্র মেলে এলাকাবাসীর থেকে| গ্রামবাসীরাই মিলিতভাবে রেললাইনের ধারে মা কালীর একটি বেদি করে দিয়েছেন | সেখানে নিত্যপুজো হয় | আর এই কালীপুজোর দিন মূর্তি পুজো করা হয় | টানা ১৫ দিন ধরে এই পুজো চলে | তারপর সামনের পুকুরে মূর্তি বিসর্জন করা হয়| শেফালির নাম থেকে এই পুজোর নাম হয়ে গিয়েছে শেফালি-কালী পুজো | মুসলিম পরিবারে বড় হয়ে কেন কালীপুজো শুরু করলেন? বৃদ্ধা শেফালী বললেন,
‘স্বপ্নাদেশ পেয়ে কালীমাতার পুজো শুরু করি| হিন্দু শাস্ত্র-মতে এই পুজোর নিয়ম-নীতি কিছুই জানা ছিল না| তবে ধীরে-ধীরে সবই শিখে ফেলেছি | এখন ভক্ত ও গ্রামবাসীদের সাহায্যে কালী মায়ের পাকা থান তৈরি করা হয়েছে | পুজোর আয়োজনে গ্রামবাসীরা সাহায্য করে থাকেন | গ্রামের মঙ্গল কামনায় কালী মাতার পুজো করে চলেছি |’