দেবরীনা মণ্ডল সাহা :-শিলিগুড়িতে এখন নয়া আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে অ্যাসিড পোকার আক্রমণ | দার্জিলিং জেলার বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষ অ্যাসিড পোকার আক্রমণে বিধ্বস্ত | উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের কয়েকজন পড়ুয়াও এই পোকার আক্রমণের শিকার হয়েছেন | এই বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে | পোকাটি শরীরে বসার পর অনেকেই তা মেরে ফেলে | তখনই শরীরের সংস্পর্শে চলে আসে পিডেরিন | আর তা শরীরে সংস্পর্শে যেতেই ত্বকের উপর লালচে দাগ ও ফুঁসকুড়ি হয় | এরপর সেখান থেকে শরীরের অন্যান্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়ে ক্ষত | তার সঙ্গে জ্বালা অনুভব হতে শুরু করে | পাশাপাশি জ্বর ও বমিও হয় |
কয়েকদিন ধরেই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল ক্যাম্পাসে এই বিষাক্ত পোকা উৎপাত দেখা দিয়েছে | তারপর শহরের বিভিন্ন জায়গা যেমন হায়দারপাড়া, দেশবন্ধুপাড়া এসমস্ত জায়গায় পোকা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গিয়েছে| চিকিৎসকদের সূত্রে খবর, এই পোকা এক ধরনের মাছি, যাকে নাইরোবি মাছিও বলা হয়ে থাকে | এই পোকার কামড়ে একাধিক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন | নাইরোবি মাছির থেকে টক্সিন নামে এক ধরনের ক্ষতিকারক পদার্থ বেরোয় | আর তাতেই মানুষের চামড়ায় ফোসকা পড়ে যায় | পোকাটি কামড়ে হুল ফোটায় | পোকাটির শরীরে ‘পিডেরিন’ নামক বিষাক্ত ও ক্ষতিকর পদার্থ থাকে | যা মানুষের ত্বক এবং কোষের মারাত্মক ক্ষতি করে| জানা গিয়েছে, অ্যাসিড পোকার রঙ লাল আর কালো | মাথার দিকটা কালো হয় আর পেট হয় লাল | ছোট্ট এই পোকার দৈর্ঘ্য ৬ থেকে ১০ মিলিমিটার| অ্যাসিড পোকা কামড়ালে ক্ষতস্থানে জ্বালাপোড়া, ব্যথা, বমিভাব, মাথাব্যথা, জ্বর হতে পারে | পোকাটি এতটাই ক্ষতিকর যে, পোকাটির সংস্পর্শে যদি কারও চোখে ক্ষত হয় সেই ব্যক্তি দৃষ্টিশক্তিও হারাতে পারেন | এই পোকার হামলা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হয়েছে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন | তাদের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে | অ্যাসিড পোকা নিয়ে ভয়ের কিছুই নেই বলে দাবি করছেন পুরকর্তারা | শুধু মানুষকে একটু সচেতন থাকতে হবে | তাহলেই এই পোকার বাড়বাড়ন্ত প্রতিরোধ করা যাবে | বাড়ির চারিদিক ও জলাধার পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখা, সন্ধ্যের আগে বাড়ির দরজা, জানালা বন্ধ রাখা, ঘরে সাদা আলোর পরিবর্তে হলুদ আলো ব্যবহার করতে হবে | ঘুমোনোর সময় মশারি টাঙানো, বিছানার চাদর- বালিশ, তোষক পরিষ্কার রাখতে বলা হচ্ছে |