প্রসেনজিৎ ধর :- ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল নববধূর। ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগণার সোনারপুরের। মঙ্গলবার সকালে সোনারপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় মৌমিতা ভট্টাচার্য (২৬) নামে ওই বধূর। স্ত্রীর মৃত্যুতে হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন স্বামী সুমিত ভট্টাচার্য।দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার জয়নগর মজিলপুরের বাসিন্দা মৌমিতা ভট্টাচার্যর ডেঙ্গি ধরা পড়ে ২৪ সেপ্টেম্বর। তাঁকে সোনারপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের পরিষেবা ও চিকিৎসা যথাযথ ছিল না বলে অভিযোগ পরিবারের। বছরখানেক আগেই বিয়ে হয়েছিল মৌমিতার। পুজোর আগে মৌমিতার হঠাৎ প্রয়াণে শোকস্তব্ধ তাঁর পরিবার-পরিজনেরা। বাসিন্দা সুমিতবাবু জানিয়েছেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর জ্বর আসে মৌমিতাদেবীর। ২৩ সেপ্টেম্বর ডেঙ্গু পরীক্ষা করান তাঁরা। ২৪ সেপ্টেম্বর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ওই রাতেই তাঁকে সোনারপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার পর থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, মৌমিতাদেবী চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না। মঙ্গলবার ভোরে সোনারপুরের বেসরকারি হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর। নিহতের স্বামীর অভিযোগ, হাসপাতালে চিকিৎসার কোনও পরিকাঠামো নেই। নেই কোনও চিকিৎসক। রোগীর পরিবারের কাছ থেকে শুধু টাকা আদায় করতে ব্যস্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।মৌমিতাদেবীর ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গু হ্যামারেজিক শকের উল্লেখ রয়েছে। তবে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিয়ের ১ বছরের মধ্যে বধূর মৃত্যুতে বিহ্বল গোটা পরিবার।প্রসঙ্গত, পুজোর আগে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি। রাজ্যে মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়েছে। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গিতে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১৬-১৭ জন। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, শুরুর দিকে রাজ্যে দাপট দেখাচ্ছিল ডেঙ্গ-৩ ভ্যারিয়্যান্ট। এখন স্বাস্থ্যকর্তাদের চিন্তা বাড়িয়ে ধীরে ধীরে সংক্রমণের হার বাড়িয়েছে ডেঙ্গ-২-ও। সাধারণভাবে ডেঙ্গির ৪ রকমের সেরোটাইপ বা প্রজাতির দাপট-ই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখা যায়। কোন সেরোটাইপয়ের দাপট বেশি, তার উপর নির্ভর করে রাজ্যের সার্বিক ডেঙ্গি চিত্র। ডেঙ্গ-৩-এর প্রভাবে সাধারণত প্লেটলেট কমে গিয়ে রোগীর বিপদ দেখা দিয়ে থাকে। অন্যদিকে, ডেঙ্গির ডেঙ্গ-২ প্রজাতি রোগীর একাধিক অঙ্গে হানা দিয়ে শক সিন্ড্রোম ডেকে আনে।