প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- লোকসভা নির্বাচনের আগেই পশ্চিমবঙ্গে প্রতিটি বুথ কমিটি গড়ে ফেলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।২০১৪ সালের আগেই বাংলার ৮০ হাজার বুথের প্রত্যেকটিতে নূন্যতম ৩০জন করে দলীয় কর্মীর সংগঠন তৈরি করতে হবে। সব মিলিয়ে ২৪ লক্ষ কর্মীর সংগঠন গড়তে বলা হয়েছে তাঁদের। আর এখানেই মাথায় হাত পড়েছে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের। যে রাজ্যে পদ্মশিবিরের ১ লক্ষ কর্মীও নেই সেখানে ২৪ লক্ষ কর্মী কোথা থেকে আসনে তা ভেবেই নাকি এখন তাঁদের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে বলে বঙ্গ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।পদ্ম শিবিরের ব্যাখ্যা, আসলে লোকসভাকে সামনে রেখে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনের আগেই রাজ্যে সংগঠনকে শক্তিশালী করার প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে তারা। ২৪ লক্ষ দলীয় কর্মী জোগাড় করা যে চাট্টিখানি কথা নয়, সেটা যে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতারাই মানবেন। খোদ বাংলার এখনকার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসেরও ২৪ লক্ষ কর্মী আছে এমন কথা তাঁরাও জোর গলায় দাবি করতে পারেন না। সেই জায়গায় নিত্যদিন যে দল থেকে নেতাকর্মীরা বেড়িয়ে যাচ্ছেন, সাংসদ থেকে বিধায়কেরা শাসক শিবিরে চলে আসছেন সেখানে কোথা থেকে ২৪ লক্ষ কর্মী আসবে সেটা ভেবেই পাচ্ছেন না পদ্মশিবিরের নেতা থেকে অনান্য রাজনৈতিক দলগুলির নেতারাও। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে বিজেপি ১৮জন সাংসদ পেয়েছিল। কিন্তু এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। ৫ বছর আগে জেতা ১৮টি আসনের মধ্যে ১টি আসনও এবারে ধরে রাখা যাবে কিনা তা জোর গলায় এই মুহুর্তে কেউ বলতে পারবেন না। কেননা পাহাড় হোক কী সমতল, জঙ্গল হোক কী শহর, সর্বত্রই বিজেপিতে ভাটা পড়ে গিয়েছে। খোদ আরএসএস নেতৃত্বও জোর গলায় বলতে পারছেন না যে বাংলা থেকে জিতে কেউ সাংসদ হবেন পদ্মশিবিরের। বিরোধীদের মতে, গত বিধানসভায় কার্যত অর্ধেকের কাছাকাছি বুথে ভোটের দিনে নিজেদের এজেন্ট দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। পুরনো ও নব্যের দ্বন্দ্বে বহু বিজেপি কর্মী বসে গিয়েছেন। এই আবহে ৮০ হাজার বুথের জন্য ২৪ লক্ষ একনিষ্ঠ কর্মী পাওয়া কি সম্ভব? রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা আশাবাদী। আমাদের লক্ষ্যই হল লোকসভা নির্বাচনের আগে তিরিশ সদস্যের বুথ কমিটি নির্মাণ।’’ দলের এক নেতার ব্যাখ্যা, তৃণমূল কংগ্রেসকে হারাতে গেলে প্রতিটি বুথে দলীয় সংগঠন প্রয়োজন। তাই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০২৬ সালের বিধানসভার লক্ষ্যে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলাই এখন দলের লক্ষ্য।