নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা :- আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে এই আশঙ্কা করে বাংলায় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞ জারি করেছিল মমতা সরকার। নবান্নের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন ছবির নির্মাতা সানসাইন পিকচার্স প্রাইভেট লিমিটেড। সেই মামলাতেই বড় ধাক্কা খেল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ এরপর আর এই রাজ্যে পরিচালক সুদীপ্ত সেন নির্মিত ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ প্রদর্শনে কোনও বাধা রইল না।এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, দেশের সব রাজ্যেই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ প্রদর্শিত হচ্ছে। আর কোথাও তেমন কোনও অশান্তির খবর প্রকাশ্যে আসেনি। বাংলাতেও যে তিন দিন ছবিটি চলেছে, তাতে তেমন কোনও অশান্তির নজির নেই। তাই রাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞায় আপাতত স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে ‘কেরালা স্টোরি’র নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সমালোচিত হয়েছে রাজ্য সরকার। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই ছবি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের কোনও যৌক্তিকতা নেই।
প্রধান বিচারপতি জানান, নির্দিষ্ট করে বাংলার কোথাও এই ছবিতে ঘিরে অশান্তি হলে সেখানে ছবিটি নিষিদ্ধ করা যেত। কিন্তু কোনও অশান্তি ছাড়াই গোটা রাজ্যে ছবি নিষিদ্ধ করার যৌক্তিকতা খুঁজে পায়নি আদালত।আদালতের পর্যবেক্ষণ, সিনেমাটি নিষিদ্ধ করে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। শুধুমাত্র ভাবনার ভিত্তিতে এ ভাবে মৌলিক অধিকার খর্ব করা যায় না।’কেরালা স্টোরি’ নিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল, এই ছবির জন্য মহারাষ্ট্রে অশান্তি হয়েছে। কিন্তু ছবির প্রযোজকের আইনজীবীর পাল্টা যুক্তি ছিল, মহারাষ্ট্রে অশান্তি হলেও ছবিটি সেখানে নিষিদ্ধ করা হয়নি।বাংলায় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’তে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উভয় তরফের সওয়াল শুনে বাংলার সরকারকে ‘অসহিষ্ণু’ বলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তাঁর কথায়, ‘অসহিষ্ণুতা সহ্য করা যায় না। প্রকাশ্যে আবেগ প্রদর্শনের ভিত্তিতে বাক-স্বাধীনতার মৌলিক অধিকার নির্ধারণ করা যায় না। আবেগের প্রকাশ্য প্রদর্শন রাষ্ট্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত করতে হবে।’এরপরই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র উপর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জারি করা নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।