দেবরীনা মণ্ডল সাহা :- পঞ্চায়েত নির্বাচনকে বিরোধীরা শান্তিপূর্ণ বলে মানতে নারাজ। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘আপনার আর কত রক্ত চাই।’ যদিও ক্ষতি বেশি হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বলে দাবি কুণাল ঘোষের। এই তপ্ত আবহে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর বেশ কিছু বুথে পুনর্নির্বাচন হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজীব সিনহা।বস্তুত, ভোটের দিন সকাল থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের ভূমিকা নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন তুলে যাচ্ছেন বিরোধীরা। এদিন ভোট শুরুর আগে থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে মৃত্যুর খবর আসছিল। অথচ, রাজীব সিনহা এদিন সকাল থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার নিজের অফিসেই এসে পৌঁছননি। তিনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে পৌঁছান অন্যদিনের মতো অফিস টাইমে| মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের এই ‘উদাসীনতা’ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। আজ দুপুরে এক সাক্ষাৎকারে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে নাকি অশান্ত হয়েছে, সেটা বলার সময় এখনও আসেনি। তবে কিছু হিংসার অভিযোগ এসেছে। বিভিন্ন জেলা থেকে নানা অভিযোগ এসেছে। সেগুলির সত্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই যাচাই করে দরকার পড়লে পুনর্নির্বাচন হবে।’ এমনকী তাঁর কথায়, ‘নির্বাচন শেষ হওয়ার আগে বুথ ছেড়ে বেরনো যাবে না। এমন কাজ ভোটকর্মীরা করলে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর হবে।’রাজ্যের ৬০ হাজারের বেশি বুথে ভোট হচ্ছে। বিভিন্ন বুথ থেকেই আসছে গন্ডগোলের খবর। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, “অভিযোগ ঘন ঘন আসছে। নির্দিষ্ট অঙ্ক বলা মুশকিল। তবে আমাদের কাছে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে ৬০০ মতো বুথের সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। আমাদের কাছে তাড়াতাড়ি খবর আসে। সব সময় কন্ট্রোলরুম খোলা রয়েছে। আমাদের আধিকারিকদের কাছেও ফোন আসছে। খবর পেলেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।”২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের দিনে এখনও পর্যন্ত ১৫ জন হিংসার বলি হয়েছেন বলে খবর মিলছে। যদিও কমিশনের কাছে মাত্র ৭টি খুনের খবর আছে বলে জানা যাচ্ছে। বাকি মৃত্যুর ব্যাপারে এখনও কিছু জানাচ্ছে না কমিশন। যে সব বুথে ব্যালট বাক্স জলে ফেলা হয়েছে বা ভোট হয়নি, সেগুলিতে পুনর্নিবাচনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। কমিশন সূত্রে খবর, যে সব পোলিং অফিসার ডিউটি ছেড়ে চলে গিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করবে কমিশন। বস্তুত, পঞ্চায়েত নির্বাচনে কিছু কিছু বুথে পুনর্নির্বাচন হওয়ার নজির আগেও রয়েছে। কিন্তু এবার কীসের ভিত্তিতে পুনর্নির্বাচন করানো হবে বা আদৌ করানো হবে কিনা, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়।