প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- ইডি অফিসারদের ওপর হামলার ঘটনার পর ১০ দিন কেটে গিয়েছে। পুলিশের ভূমিকা প্রশ্ন উঠেছে আগেই। আর এবার পুলিশের পদক্ষেপ দেখে কার্যত বিস্ময় প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। যে ঘটনায় প্রায় তিন হাজার মানুষ অভিযুক্ত, সেই ঘটনায় মাত্র ৪ জনকে কেন গ্রেফতার করা হল, সেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্য পুলিশকে। শেখ শাহজাহানই বা আত্মসমর্পণ করছেন না কেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন রাজ্যকে। এদিকে, নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেস ডায়েরি না নিয়ে যাওয়ায় ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। এদিন ইডি আবেদন জানিয়েছে, গোটা ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হোক সিবিআই-কে।অবশেষে ‘প্রকাশ্যে’ শেখ শাহজাহান। সোমবার আদালতের দ্বারস্থ হলেন ‘নিখোঁজ’ তৃণমূল নেতা। তাঁর আইনজীবী আদালতে আর্জি জানালেন শাহজাহানকে সন্দেশখালি মামলায় যুক্ত করার। ঘটনার সূত্রপাত গত ৫ জানুয়ারি। রেশন দুর্নীতি মামলায় সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে যায় ইডি।
সেখানেই স্থানীয় বাসিন্দা ও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন আধিকারিকরা। জখম হন। প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে বাঁচেন জওয়ানরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পুলিশে মামলা হয়েছে বলে খবর। এদিকে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ইডি। সিবিআই তদন্ত দাবি করেন তাঁরা। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল এদিন জানান, মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর পর আদালত প্রশ্ন করে, এখন কে তদন্ত করছে? অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, লোকাল পুলিশ তদন্ত করছে ডিএসপি’র নেতৃত্বে। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, তিন হাজার অভিযুক্ত চার জন গ্রেপ্তার কেন? অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, তিনহাজার নয়, ৮০০ থেকে ১০০০ অভিযুক্ত। বিচারপতি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, ৩০৭ ধারা কেন যোগ হয়নি? এখনও কেন ন্যাজাট থানার পলিশকে তদন্তে রাখা হয়েছে? এতদিনেও মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়নি। ইডির অভিযোগ, ঘটনার সময় শাহজাহান বাড়িতে ছিল। সব ঘটনার পরে পুলিশ আদৌ সেই বাড়িতে ঢুকেছিল কিনা সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি।সোমবার সেই মামলার শুনানিতেই বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন শাহজাহানের আইনজীবী। তিনি আবেদন করেন তাঁর মক্কেলকে এই মামলায় যুক্ত করার জন্য। এর পরই ভর্ৎসনার সুরে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, তাঁর মক্কেল কেন এখনও আত্মসমপর্ণ করেননি। পালটা আইনজীবী দাবি করেন, শাহজাহানের অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে। অভিযান নিয়ম মাফিক হয়নি। এর পরই সিবিআইয়ের আইনজীবী ওকালতনামা জমা দেওয়ার কথা বলেন। আগামিকাল এই মামলার পরবর্তী শুনানি।