দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- পার্ক স্ট্রিট থানার অভিযুক্ত এসআই অভিষেক রায়কে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। তাঁরই এলাকায় মোতায়েন এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারকে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। ওই মহিলা নিজে চিঠি লিখে বিষয়টি জানানোর পরেই জানাজানি হয়। তার পরে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয় অভিযুক্ত এসআইয়ের বিরুদ্ধে। তাঁকে ক্লোজ করা হয়। সোমবার গ্রেফতার হলেন তিনি।এই ঘটনার সূত্রপাত হয় ৪ অগাস্ট এবং ৫ অগাস্টের রাতে। দুর্গাপুজো উপলক্ষে পোশাক দেওয়া হবে বলে ওই মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারকে জানান এসআই অভিষেক রায়। মহিলার দাবি, এরপর অভিষেক রায় তাঁকে থানার রেস্ট রুমে ডেকে পাঠান। তিনি মহিলাকে জানান, ওই ঘরেই পুজোর পোশাক দেওয়া হবে তাঁকে। মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের অভিযোগ, এরপর রেস্ট রুমে তাঁর জন্য বরাদ্দ পুজোর পোশাক নিতে যান তিনি।
আর, সেই সময়েই ওই রেস্ট রুমের ভিতর এসআই অভিষেক রায় তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন এবং তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। এই ঘটনার পর ওই রাতেই পার্ক স্ট্রিট থানার কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান সংশ্লিষ্ট মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার।এই অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করে পুলিশ প্রশাসন। অভিযুক্ত অভিষেক রায়কে প্রথমে তাঁর ডিউটি থেকে ‘ক্লোজ’ করা হয়। তারপর অভিষেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হয়। সবশেষে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবারই তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে।
এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, যে পুলিশ সমাজের রক্ষক, সেই পুলিশেরই হাতে, থানার ভিতরে, সেখানেই কর্মরতা এক মহিলা যদি লাঞ্ছিতা হন, তাহলে বাকি নারীদের সুরক্ষার নিশ্চয়তা কে দেবে?বিষয়টি সামনে আসার পর প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিকরা পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিশিষ্টরা বলছেন, আরজি কর কাণ্ডের পর এত আন্দোলন হল। তারপরও যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে বুঝতে হবে, মহিলাদের প্রতি অপরাধের প্রবণতা এক ভয়ঙ্কর সামাজিক ব্যধিতে পরিণত হয়েছে।এখানেই শেষ নয়। ওই মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের দাবি, এর আগেও এমন ঘটনা তাঁর সঙ্গে ঘটিয়েছেন অভিযুক্ত ওই অফিসার। তিনি লিখেছেন, ‘এর আগেও ১৫ সেপ্টেম্বর তারিখে দুপুর দেড়টা নাগাদ মদ্যপ অবস্থায় তিনি পার্ক স্ট্রিট থানার কম্পিউটার রুমে আমার সঙ্গে একই ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। আমি সেবার বিষয়টি উপেক্ষা করেছিলাম, পরিবারকেও কিছু জানাইনি। কিন্তু এবার আমার মানসিক অবস্থা খুবই বিপর্যস্ত। আমি নিরাপত্তাহীন বোধ করছি, আত্মসম্মানের অভাব অনুভব করছি।’