দেবরীনা মণ্ডল সাহা:- ঘূর্ণিঝড় দানার মোকাবিলায় সময় থাকতে বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে রাজ্য। মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক থেকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ২৪ অক্টোবর রাত থেকে ২৫ অক্টোবর সকালের মধ্যে সাগরদ্বীপে বা পুরীতে ল্যান্ডফল করতে পারে ঘূর্ণিঝড় দানা। তখন ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিমি | এদিন মুুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা একদিন আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। ১৩ তারিখ থেকেই সমুদ্র সংলগ্ন এলাকায় গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বন্ধ রাখা হবে ফেরি সার্ভিসও। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাত জেলায় পাঠানো হচ্ছে প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারিদের।” বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে আগামী ২৩ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যের ন’টি জেলার সব স্কুলে ছুটি থাকবে, ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বুধবার থেকেই সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় সতর্কতা জারি করা হচ্ছে।আবহবিদদের অনুমান, বুধবার রাত এবং বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে ওড়িশার পুরী এবং এই রাজ্যের সাগরদ্বীপের মধ্যবর্তী কোনও অংশ দিয়ে স্থলভাগে ঢুকতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। আর ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলার উপর পড়তে পারে। দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে বেশি প্রভাব পড়ার আশঙ্কা। এ ছাড়াও, এই তিন জেলার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলি কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে প্রভাব পড়তে পারে। এই ন’টি জেলাতে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘‘দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই ইন্ট্রিগ্রেটেড কন্ট্রোলরুম চালু করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা সেই কন্ট্রোল রুম খোলা থাকছে। বুধবার থেকেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। মাইকিং চলছে সর্বত্র।’’ঘূর্ণিঝড় দানার দাপটে জেলায় জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। দুর্গা পুজোর মুখে ভারী বৃষ্টির সময়ে ডিভিসি জল ছাড়ায় জেলায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে ডিভিসিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যখন বৃষ্টিতে ভাসব, তখন তোমরাও জল ছেড়ে আরও ভাসিয়ে দেবে বললে হবে না। আমি আগে থেকেই জানিয়েছি, এই ক’দিন যেন ডিভিসি জল না ছাড়ে।”এদিকে পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ২৪ তারিখ মন্ত্রিসভার বৈঠক আছে। তবে সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলার মন্ত্রীদেরকে এলাকায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।