দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- দলবিরোধী কাজ করলে আর কাউকে রেয়াত নয়। প্রথমে শোকজ। তারপর সাসপেন্ড। কোন কমিটি কীভাবে ব্যবস্থা নেবে, কারা সদস্য, সেই সব বিষয়েই সোমবার আলোচনা হল কর্মসমিতির বৈঠকে। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বেরিয়ে দলের তরফে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, উপনির্বাচনের ফলের জন্য রাজ্যবাসীকে মুখ্যমন্ত্রী শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সকলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। এরপরই দলের কর্মসমিতির নতুন ৫ সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন চন্দ্রিমা। এছাড়া জানান, মোট তিনটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। তাতে কারা থাকছেন, তাঁদের নামও জানালেন তিনি। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নতুন মুখপাত্রদের নামও জানালেন চন্দ্রিমা। এদিনের বৈঠক শেষ হতেই চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দিলেন রদবদলের তথ্য। জানা যাচ্ছে, কর্মসমিতির সদস্য হচ্ছেন আরও ৫ জন। তাঁরা হলেন, বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মালা রায়, মানস ভুঁইঞা, জাভেদ খান। বস্তুত, সোমবারের বৈঠকেও অভিষেক একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বলেই তৃণমূল সূত্রের খবর। বিধানসভায় পাশ-হওয়া অপরাজিতা বিল কেন এখনও কার্যকর হয়নি, তা মানুষকে বুঝিয়ে কর্মসূচি নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন অভিষেকই। সেই মতো আগামী ৩০ নভেম্বর, শনিবার এবং ১ ডিসেম্বর, রবিবার ব্লকে ব্লকে মিছিল-ধর্না-মিটিংয়ের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের মহিলা বাহিনীই ওই কর্মসূচি করবে। ঘটনাচক্রে, ৩০ নভেম্বরেই ডায়মন্ড হারবারে নিজের সংসদীয় এলাকায় ‘ডক্টর্স মিট’ কর্মসূচির কথা রয়েছে অভিষেকের। সেই একই দিনে তৃণমূলের মহিলা বাহিনীর দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। মমতার কালীঘাটের বাড়ি লাগোয়া দফতরে দলীয় বৈঠকের পর অভিষেক সন্ধ্যার উড়ানে দিল্লি গিয়েছেন। লোকসভার অধিবেশনে তিনি নিয়মিত হাজির থাকবেন বলেই খবর। দিল্লির ‘মুখপাত্র’ হিসাবে অভিষেকের সঙ্গেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুস্মিতা দেব, কাকলি ঘোষদস্তিদার, সাগরিকা ঘোষ এবং কীর্তি আজ়াদকে। এঁরা যদি ‘এলাকাভিত্তিক’ মুখপাত্র হন, তা হলে পাশাপাশি ‘বিষয়ভিত্তিক’ মুখপাত্রও বেছে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা। অর্থনৈতিক বিষয়ে বলার ভার দেওয়া হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এবং বর্তমান অর্থ প্রতিমন্ত্রী (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) চন্দ্রিমাকে। শিল্প সংক্রান্ত বিষয়ে বলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা এবং সাংসদ পার্থ ভৌমিককে। উত্তরবঙ্গ, ঝাড়গ্রাম, চা বাগান ইত্যাদি বিষয়ে বলার জন্যও মুখপাত্র নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। উত্তরবঙ্গ নিয়ে বলার দায়িত্ব পেয়েছেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ এবং সাংসদ প্রকাশ চিক বরাইক। চা বাগান নিয়ে বলার দায়িত্ব শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিলেন, বীরভূমে অনুব্রতর নেতৃত্বেই চলবে তৃণমূল। এদিন মমতা বলেন, ‘কেষ্ট বীরভূমের জেলা সভাপতি। পদাধিকারবলে কোর কমিটিসহ জেলার সমস্ত কমিটির চেয়ারম্যান ও। জেলা সভাপতি কোর কমিটির সাধারণ সদস্য এটা আবার হয় না কি?’ সঙ্গে জেলায় দল কী কী কর্মসূচি নেবে তা কোর কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে ঠিক করতে বলেছেন মমতা।