বাবলু প্রামাণিক, দক্ষিণ ২৪ পরগণা :- ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর প্রভাব খুব একটা পড়েনি গোসাবায় | এর আগে আয়লা, ফণি, বুলবুল, আমফান-একের পরে এক ঘূর্ণিঝড়ের ঝাপটা সহ্য করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার গ্রামটি | নদী বাঁধ ভেঙে কিংবা নদীর জলোচ্ছ্বাসে ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা এর আগে ঘটেনি | ইয়াস আছড়ে পড়ার দিন নদীর জলস্তর বেড়ে রীতিমতো ভেসে যায় গ্রাম | বাড়ি ঘর থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি দফতর চলে যায় জলের তলায় | জলের হাত থেকে রেহাই পায়নি খোদ ব্লক প্রশাসন অর্থাৎ বিডিও অফিস | নদীতে এখনও জলস্ফিতি থাকায় বুধবারের পর পাঁচদিন অতিবাহিত হলেও সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে সেচ দফতরের কর্মীদের | সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এই এলাকার ১৪ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে | একে ভরা কোটাল তায় চন্দ্রগ্রহণের ফলে নদীর জলস্তর হু হু করে বাড়তে থাকে| এর ফলে নদী ও সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে করেছে বিঘার পর বিঘা ফসল নষ্ট হয়ে যায় | জল ঢুকে যায় বহু বাড়িতে | জলের হাত থেকে রেহাই পায়নি ব্লক প্রশাসনের অফিস অর্থাৎ বিডিও অফিসও | বিডিও অফিসের নীচের তলায় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অচিন পাইক ও সহকারি সহকারি সভাপতি কৈলাস বিশ্বাসের ঘরে জল থই থই অবস্থা | একই অবস্থা অন্যান্য ঘরগুলোতেও | অফিসের ভেতরে জলে ভেতরে ভেসে বেড়াচ্ছে সাপ-ব্যাঙ ও অন্যান্য পোকামাকড় | ফলে আতঙ্কে অফিসে আসছেন না কেউই | সরকারি আধিকারিকরা কেউই বসতে পারছেন না নিজেদের ঘরে। এর ফলে ত্রাণ ও পুনর্গঠনের কাজেও সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে ব্লক প্রশাসনকে | কোনও মতে দোতলা থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ওপরে নজরদারি চালাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারা | এই সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন গোসাবার বিডিও সৌরভ মিত্র | তিনি জানিয়েছেন, শুধু গোসাবা ব্লকের দেড় লক্ষাধিক মানুষকে বিভিন্ন ফ্লাড সেলটার, বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, স্কুল বাড়ি এমনকি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে | প্রশাসনের তরফে জোর তৎপরতা শুরু করা হয়েছে নদীবাঁধগুলোকে পুনরায় বাঁধার জন্য | কিন্তু এবার যে পরিমাণ নদীবাঁধ ভেঙেছে, তা সর্বকালের রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছে|