Breaking News

ব্রেন ডেথের পরেও অঙ্গদানে তিনজনকে নতুন জীবন দান চিকিৎসকের,অঙ্গদানকে কুর্নিশ চিকিৎসক মহলের !

দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- চিকিৎসকরা আমাদের জীবনদান করেন চিকিৎসার মাধ্যমে | কিন্তু মৃত্যুর পরেও যে একজন চিকিৎসক আরও বেশ কিছু মানুষকে জীবনদান করতে পারেন সেই নজীর এবার গড়তে চলেছেন ডা. সংযুক্তা শ‌্যাম রায়ের পরিবার | আর তাই ডা. সংযুক্তা শ‌্যাম রায়ের পরিবারকে কুর্নিশ জানিয়েছে চিকিৎসক মহল | এনআরএস মেডিকেল কলেজের প্রাক্তনী ডা. সংযুক্তা শ‌্যাম রায়(৪৩) ছিলেন কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালের অ্যানাস্থেশিয়া বিশেষজ্ঞ | গত শনিবার তাঁর মারাত্মক কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়| বেশ কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে যায় হৃদযন্ত্র | পরে তা সচল হলেও রক্ত সরবরাহের অভাবে ক্ষতি হয়ে যায় মস্তিষ্কের | অ্যাপোলো হাসপাতালেই চলছিল তাঁর চিকিৎসা | সেখানেই সোমবার সকালে চিকিৎসকরা বুঝে যান, রোগিনীর ব্রেন ডেথ হতে চলেছে| মঙ্গলবার অ্যাপোলোয় ব্রেন ডেথের পর তাঁর মরণোত্তর লিভার ও দু’টি কিডনি নিয়ে নতুন জীবন পাওয়ার কথা কলকাতা ও লাগোয়া শহরতলির তিন বাসিন্দার | রিজিওনাল অর্গ্যান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশন (রোটো) সূত্রে জানা গিয়েছে, গভীর রাতে তাঁর মরণোত্তর অঙ্গ আহরণ (রিট্রিভ্যাল) ও সংরক্ষণের (হার্ভেস্টিং) প্রক্রিয়া শুরু হয় | আজ, বুধবার গ্রহীতাদের শরীরে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অপারেশন করা হবে | পাশাপাশি আরও একজন চিকিৎসকের কর্ণিয়া পাবেন বলে খবর | মঙ্গলবার সংযুক্তাকে ব্রেন ডেথ হিসাবে ঘোষণা করা হয় | তারপর মঙ্গলবার রাতেই সংযুক্তার লিভার, কিডনি ও কর্ণিয়া সংরক্ষণের প্রক্রিয়া শুরু হয় | এদিন সকাল থেকেই শুরু হয় সেই অঙ্গপ্রতিস্থাপনের কাজ | সংযুক্তার লিভার অ্যাপোলোরই এক রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপিত হবে | একটি কিডনি পাবেন এসএসকেএমের এক রোগী এবং অন্য কিডনিটি পাবেন দমদম আইএলএস হাসপাতালের এক রোগী | দিশা আই হসপিটালে ভর্তি এক জন্মান্ধ ব্যক্তি পাবেন সংযুক্তার কর্ণিয়া | মাত্র সাড়ে ৭ বছরের এক মেয়ে ও স্বামীকে রেখে যাওয়া সংযুক্তা এবার এদের শরীরে বেঁচে থাকবেন |মৃত্যুর পরেও তিনজনকে যে নতুন জীবন দেওয়া যায় সেটাই এখন করে দেখাচ্ছেন সংযুক্তার পরিবার। তাই অ্যানাস্থেশিয়া বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা শ‌্যাম রায়ের পরিবারকে কুর্নিশ জানিয়েছেন রাজ্যের চিকিৎসক মহল | আর এই ঘটনা রাজ্যের চিকিৎসা জগতে এক অনন্য নজির হয়ে রইল | অঙ্গদানের মধ্যেই বেঁচে থাকবেন এই চিকিৎসক | বিশিষ্ট চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সমর বসাক এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘মাত্র ৪৩ বছর বয়সে মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখের | কিন্তু আমার মনে পড়ছে না কোনও চিকিৎসক মৃত্যুর পরেও এমন নজির করতে পারেন |

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *