প্রসেনজিৎ ধর :- ২০ ঘণ্টা পেরোলেও এখনও হদিশ মেলেনি ডায়মন্ড হারবার জেটি ঘাট থেকে হুগলি নদীতে তলিয়ে যাওয়া ২ নাবালিকার।বাবার সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে । ভরসন্ধায় ভেসেল থেকে নামতে গিয়ে নদীতে তলিয়ে গেল দুই বোন। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ডায়মন্ড হারবার জেটি ঘাটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। মৃত দুই বোনের নাম আতিফা পারভিন (৬) ও সীতারা নাজ (৮)। নদীতে দীর্ঘক্ষণ ধরে তল্লাশি চালানোর পরেও দুই বোনের কোনও হাদিস মেলেনি। এমন ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই বোন তপয়ার পঞ্চানন তলার বাসিন্দা। বাবা জাকির হোসেন ও পরিবারের অন্য সদস্যের সঙ্গে তারা ঘুরতে গিয়েছিল। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় কুঁকড়াহাটি থেকে ভেসিলে করে ডায়মন্ড হারবার জেটি ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। মোট ১০ জন যাত্রী ছিল ওই ভেসেলে। এরপর সন্ধ্যা ছটা নাগাদ ডায়মন্ড হারবার জেটি ঘাটে ভেসেলটি নোঙ্গর করে। ওই ভেসেলের সামনে ছিল আরও একটি ভেসেল। তবে দুটি ভেসেলের মাঝখানে কিছুটা ফাঁক ছিল। এরপর দুই বোন ভেসেল থেকে নামতে গিয়ে সেই ফাঁক লক্ষ্য করেনি। তারা সোজা হুগলি নদীতে পড়ে যায়।রাতেই শুরু হয় হয় তল্লাশি। জেটি ঘাটে যান খোদ এসডিও। রাতে দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালালেও হদিশ মেলেনি তাদের। সোমবার সকালে ফের শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ক্যুইক রেসপন্স টিম রয়েছে ঘটনাস্থলে। কাকদ্বীপ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে ডুবুরির দল। আকাশে ওড়ানো হয়েছে ড্রোন। কিন্তু শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, নিখোঁজদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।ডায়মন্ড হারবার পুরসভার চেয়ারম্যান প্রণব দাস জানিয়েছেন বলেন, “এই প্রথম জেটিতে এধরণের দুর্ঘটনা ঘটল। পুর কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ওই জেটিতে খুব শীঘ্রই সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। জেটি ও ভেসেলের মধ্যবর্তী স্থানে যাতে কোনও শূন্যস্থান না থাকে সেটা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। ভেসেল চলাচলের সময় জেটিতে নজরদারির ব্যবস্থা আগেই ছিল। সেই ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হচ্ছে।”ডায়মন্ড হারবার পুরসভা জেটিঘাট পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। ফলে এই দুর্ঘটনায় পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা পুরসভার বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে। জেটিঘাটে কোনও সিসি ক্যামেরা বা পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা কেন করা হয়নি সে প্রশ্নও উঠেছে। ভেসেল থেকে জেঠিতে ওঠানামার সময় যাত্রী নিরাপত্তায় পুরসভার পক্ষ থেকে কোনও নজরদারির ব্যবস্থা নেই বলেও অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের।