প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- দেশজুড়ে অনলাইন ফার্মাসি বন্ধ করতে কড়া নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল। আদালতের নির্দেশে উল্লেখ করে তারা দেশের সবকটি রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলারকে আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছে। জানিয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে ওষুধ বিক্রি সম্পূর্ণ বেআইনি। খোদ দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এই রায় দিয়েছিলেন। পরবর্তী রায় না দেওয়া পর্যন্ত বিক্রি বন্ধ রাখারও নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। তাই এই নির্দেশ যেন লাগু করা হয়। শুধু তাই নয়, বিষয়টিকে যে কেন্দ্র নেহাত আর একটি সরকারি নির্দেশের মতো দেখছে না, তা বোঝাতে ৮ ফেব্রুয়ারি দেশের অন্যতম ২৪টি বড় কর্পোরেটের ই-ফার্মেসিকে শো-কজ করেছে তারা। লাইসেন্স ছাড়া অনলাইনে ওষুধ বেচায় কেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এই উত্তর তাদের কাছে জানতে চেয়েছেন খোদ ড্রাগস কন্ট্রোল জেনারেল, ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) ডাঃ ভি জি সোমানি। বড় কর্পোরেট পরিচালিত ই-ফার্মাসির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। মোট বাজার কমপক্ষে ৩ হাজার কোটি টাকার। দেশের অর্থনীতিবিদরা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, যেভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে, প্রতি বছর কমপক্ষে ২০-২৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে অনলাইনে ওষুধ কেনাকাটার বাজার। এর একটা বড় কারণ সেই ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে বড়সড় ছাড় পাওয়ার সুবিধা। খুচরো দোকানদারদের কাছে মাসকাবারি ওষুধ কিনলে বড়জোর ১০, ১৫, ১৮, বড়জোর ২০ শতাংশ ছাড় মেলে যেখানে, সেখানে অনলাইনে ওষুধ কিনলে ১৫, ২০, ২২, ২৫ এমনকী ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় মেলে। আর এই ছাড়ের জেরেই ওষুধ বেচে দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে ই-ফার্মাসিগুলি।
কিন্তু দেশজুড়ে খুচরো ও পাইকারি মিলিয়ে ওষুধ ব্যবসায় ১০ লক্ষ দোকানদার ও দেড় কোটি মানুষের রুজিরুটি জড়িয়ে রয়েছে। অনলাইনে ওষুধ বিক্রি শুরু হওয়ায় সরাসরি এই ১০ লক্ষ দোকানদার ও দেড় কোটি মানুষের রুজিরুটিতে বড়সড় আঘাত নেমে এসেছে। শুধু তাই নয়, বিনা লাইসেন্সের অনলাইনের দোকানগুলির মাধ্যমে সহজেই ঘুমের ওষুধ ও নারকোটিক ড্রাগ যুবসমাজের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। তার জেরে দেশে ওষুধ খেয়ে নেশা করার প্রবণতাও বেড়ে গিয়েছে হু হু করে। তার জেরেই দিল্লি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিল দেশে খুচরো ও পাইকারি ওষুধ বিক্রির দোকানদারদের সর্বভারতীয় সংগঠন এআইওসিডি।সেই মামলাতেই দিল্লি হাইকোর্টের রায়, অনলাইনে যাবতীয় ওষুধ বিক্রি বন্ধ করতে হবে।