প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- বাংলার নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে এবার গুগলকে চিঠি পাঠাল কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই, তদন্তে এমন পদক্ষেপ প্রথম।সিবিআই সূত্রে খবর, দু’টি ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে গুগলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ গুগলের সাহায্যেই ওই ওয়েবসাইটে গিয়ে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে চান গোয়েন্দারা। জানা গেছে, তাছাড়াও আরও ওয়েবসাইট সম্পর্কেও জানতে চেয়েছে সিবিআই।
সূত্রের খবর, তদন্তে পর্ষদের একটি নকল ওয়েবসাইটের সন্ধান পেয়েছে সিবিআই। জানা গেছে, যাঁরা টাকা দিত চাকরির জন্য তাঁদের নাম ওই ‘ভুয়ো’ ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়া হত। তারপর সেটা দেখিয়েই চাকরিপ্রার্থীদের থেকে আরও টাকা নেওয়া হত বলে, তদন্তকারী অফিসাররা জানাচ্ছেন।সিবিআই সূত্রের খবর, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নামে নকল দু’টি ওয়েবসাইট তৈরি করার তথ্যপ্রমাণ এসেছে সিবিআইয়ের হাতে। অবশ্য পরে ওই ওয়েবসাইটগুলিকে উড়িয়ে দেওয়া হয়। সিবিআই তরফে দাবি করা হচ্ছে যে, এগুলি সম্ভবত কুন্তলের নামেই করা। এ বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্যের জন্য গুগলকে চিঠি দেওয়ার পরিকল্পনাও করেছে তদন্তকারী সংস্থা। কোন আইপি অ্যাড্রেস এবং মেল আইডি ব্যবহার করে ওই নকল ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছিল, কবে তা মুছে ফেলা হল। তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, ওই তথ্য হাতে এলে নিয়োগ দুর্নীতির শিকড় যে কতটা গভীর পর্যন্ত ছড়িয়েছিল, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। সিবিআই সূত্রের খবর, ওই দু’টি ওয়েবসাইট ব্যবহারের নেপথ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক বা একাধিক ‘বড় মাথা’ জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, তা ছাড়া এই কাজ সম্ভব হত না। আপাতভাবে সাইটটি আসল না নকল, তা দেখে বোঝার উপায় ছিল না। যে সব চাকরিপ্রার্থী টাকা দিতেন, তাঁদের নাম নকল ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়া হত। ওয়েবসাইটটি দেখিয়ে তাঁদের বোঝানো হত যে, চাকরি পাকা। সিবিআই সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে যে, চাকরিপ্রার্থীরা নিজেদের নাম দেখে নিশ্চিন্ত হওয়ার পর কোনও একটা সময় ওই ওয়েবসাইট দু’টি মুছে ফেলা হয়। কবে এবং কী ভাবে ওই ওয়েবসাইট দু’টি মুছে ফেলা হল, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।অন্যদিকে সিবিআই জানতে পেরেছে, এই মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ পর্ষদের ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। টাকা নিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রতি দিতেন কুন্তল ঘোষ। পর্ষদের ওয়েবসাইটে নাম দেখিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলত কুন্তল ঘোষ। এমনকী যাঁরা ফেল করতেন ওয়েবসাইটের দেওয়া রেজাল্টে তাঁকে ‘পাশ’ দেখানো হতো। আবার সেই রেজাল্টের প্রিন্টআউটও দেওয়া হতো। দু’দিন পর ওয়েবসাইট থেকে সেই নাম মুছে ফেলা হতো। পর্ষদের আসল ওয়েবসাইটে উট ইন রয়েছে। আর ভুয়ো ওয়েবসাইটে ডট কম। এখান থেকেই রহস্যের উন্মোচন এবং চিঠি গুগলকে।