দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- দিল্লি মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে শক্তিশালী সাইক্লোন মোকার । বাংলাদেশ এবং মায়ানমার সীমান্তে সিতওয়ে বন্দরে রবিবার দুপুরে ল্যান্ডফল হবে মোকার। সে সময় এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টাতে। ল্যান্ডফলের সময় গতিবেগ হতে পারে ১৭৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।পশ্চিমবঙ্গের উপর সেই অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রত্যক্ষ প্রভাব না পড়লেও ‘মোকা’-র প্রভাবে আজ ভারতের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কয়েকটি অংশে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হবে। শনিবার ও রবিবার ভারী বৃষ্টি হবে ত্রিপুরা ও মিজোরামে। রবিবার ভারী বৃষ্টি হবে নাগাল্যান্ড, মণিপুর এবং অসমে। সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়া।শুক্রবার সকালে ভারতীয় মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, শেষ ছ’ঘণ্টায় (ভোর ৫ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) নয় কিলোমিটার বেগে ‘মোখা’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছে। পরিণত হয়েছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে।
আপাতত দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন মধ্য বঙ্গোসাগরের যে জায়গায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ অবস্থান করছে, তা পোর্টব্লেয়ারের পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমে ৫২০ কিমি, বাংলাদেশের কক্সবাজারের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ১,০১০ কিমি এবং মায়ানমারের সিটওয়ের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ৯৩০ কিমি দূরে অবস্থিত।মৌসম ভবনের বুলেটিনে আরও জানানো হয়েছে, আগামী কয়েক ঘণ্টায় উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোসাগরের উপর আরও শক্তিশালী হবে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’। তারপর আগামী রবিবার দুপুরে কক্সবাজার (বাংলাদেশ) এবং কেয়াকফিউয়ের (মায়ানমার) মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ উপকূল এবং উত্তর মায়ানমার উপকূল পার করবে। যা সিটওয়ের কাছে হবে। সেইসময় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় থাকবে ‘মোকা’। ঝোড়ো হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় ১৫০-১৬০ কিমি হবে। কখনও কখনও তা ১৭৫ কিমিতেও পৌঁছে যেতে পারে।মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, আজ আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কয়েকটি অংশে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টিপাত হবে। শনিবার ত্রিপুরা ও মিজোরামের অধিকাংশ জায়গায় ভারী বর্ষণ হতে পারে। রবিবার ওই দুটি রাজ্যে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। আবার রবিবার মণিপুর, দক্ষিণ অসম এবং নাগাল্যান্ডের অধিকাংশ জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে | বাংলাদেশের কক্সবাজার, মায়ানমারের কাউকপিউ, সিতওয়ে বন্দরে এই ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডব চালাবে বলে জানিয়েছে দিল্লির মৌসম ভবন। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা এই সমুদ্র বন্দরগুলিতেও তাণ্ডব চালাতে পারে মোকা। এর জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে হাসিনার প্রশাসন।আগামী রবিবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা, আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের উপকূলবর্তী এলাকায় মৎস্যজীবীদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ মোকাবিলায় ওই সমস্ত অংশে এমারজেন্সি রেসকিউ সেন্টার প্রস্তুত রাখার কথাও বলেছে দিল্লির মৌসুম ভবন।