প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- আইআইটি খড়গপুর ছাত্র মৃত্যুতে সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ রাজ্য। এই মামলায় আগে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দিয়েছিলেন, অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে মৃত ছাত্রের দেহ তুলে কলকাতায় এনে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করতে হবে। রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হওয়ায় বিচারপতি মান্থার এই নির্দেশ এখনই কার্যকর হচ্ছে না। এদিন মামলা উঠলে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, আগামী সপ্তাহের প্রথমে এই মামলার শুনানি হতে পারে। বিচারপতি মান্থা এক সপ্তাহের জন্য মামলা শুনানি পিছিয়ে দেন। আগামী শুক্রবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।ফয়জানের দেহ দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য গত ২৫ এপ্রিল নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। সেক্ষেত্রে নির্দেশ ছিল, অসম পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে কবরে থাকা ফয়জানের দেহ তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করতে হবে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্ত করানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, অভিযোগ ওঠে হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও রাজ্য পুলিশ এখনও অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তোলে ফয়জানের পরিবার।
তার আগে হাইকোর্ট একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করেছিল। সেই কমিটির মাথায় ছিলেন চিকিৎসক অজয় গুপ্ত। ওই কমিটি রিপোর্টে জানিয়েছিল, ওই ছাত্রের মাথায় ভারি কিছু দিয়ে আঘাত করার চিহ্ন রয়েছে। তবে পুলিশি রিপোর্টে তার উল্লেখ ছিল না। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পরে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি।উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর আইআইটি খড়্গপুরের লালা লাজপত রায় হলের একটি ঘর থেকে ফয়জান আহমেদের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। এরপরেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তারপরেই অসমের তিনসুকিয়া থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে এসে ছেলেকে খুনের অভিযোগ করেছিলেন ফয়জানের বাবা মা। প্রথমে মৃতদেহটি ফয়জানের বলে অস্বীকার করে তাঁর পরিবার। পরে তাঁরা দেহটি শনাক্ত করেন। ফয়জানের মৃত্যুর ঘটনায় খড়গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গত ১৮ ফেব্রুয়ারি একটি এফআইআর রুজু করেন। তাতে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফয়জান আইআইটি কর্তৃপক্ষকে একটি ইমেইল করেন। তাতে ৪ ছাত্রের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ তোলা হয়। এমনকী ওয়ার্ডেন এবং সহকারী ওয়ার্ডেন এনিয়ে কোনও ব্যবস্থা নেননি বলেও অভিযোগ তোলা হয়। তার ভিত্তিতে ৪ জন আদালতে গিয়ে সম্প্রতি আত্মসমর্পণ করেছেন। পরে অবশ্য তাদের জামিন দিয়েছে আদালত।