দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের নিশানায় মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারকে একটি চিঠি লিখেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেখানে রাজ্যপালের প্রশ্ন ফিরহাদ হাকিমের পদ নিয়ে। ফিরহাদ হাকিম রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী এবং কলকাতার মেয়রও। এই দুই পদে এক ব্যক্তির থাকা নিয়েই রাজ্যপাল প্রশ্ন তুলেছেন। জানতে চেয়েছেন, কী করে ফিরহাদ হাকিম একই সঙ্গে মন্ত্রী–মেয়র? ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করার পর এই চিঠি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।এদিকে রাজভবন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারকে লেখা চিঠিতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানতে চান, এটা কি ‘অফিস অব প্রফিটের’ মধ্যে পড়ছে? যদিও এই নিয়ে জবাব দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিমও। ‘একইসঙ্গে মন্ত্রী, আবার কলকাতার মেয়র কীভাবে?’ এই প্রশ্নও তোলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট চিঠিতে। তবে তখন তিনি রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। শোভন চট্টোপাধ্যায় ইস্তফা দেওয়ার পর কলকাতার পুরসভার মেয়র হন ফিরহাদ হাকিম ২০১৮ সালে। পুর আইন অনুযায়ী, মেয়র হতে গেলে কলকাতা পুরসভার কোনও ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হওয়া বাধ্যতামূলক। সেই আইন সংশোধন করে রাজ্য সরকার। পরে অবশ্য ভোটে জিতে কাউন্সিলর হন ফিরহাদ হাকিম। সুতরাং মেয়র হতে তাঁর কোনও আইনি জটিলতা থাকে না। আবার নির্বাচিত বিধায়ক হওয়ায় তিনি মন্ত্রীও।ঘটনাচক্রে, ফিরহাদকে ঘিরে রাজ্যপালের নবান্নে পাঠানো চিঠি প্রসঙ্গটি যখন প্রকাশ্যে আসে, সেই সময় তিনি রয়েছেন দিল্লিতে। সেখানে তৃণমূলের কর্মসূচিতে যোগদান করতে দু’দিনের জন্য দিল্লি গিয়েছেন কলকাতার মেয়র। যাওয়ার আগে ফিরহাদ বলে গিয়েছেন, ‘‘আমি রাজ্যপালের কোনও বক্তব্যে পাল্টা মন্তব্য করতে রাজি নই। এর আগে জগদীপ ধনখড়ও একই ভাবে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তাই আমি কী ভাবে মন্ত্রী এবং মেয়র পদে রয়েছি তা আমার মুখ্যমন্ত্রী জানলেই হবে, রাজ্যপালের না জানলেও চলবে।’’তবে ফিরহাদই নয়, এর আগে শোভন চট্টোপাধ্যায়ও একই ভাবে রাজ্যের মন্ত্রী এবং মেয়র পদে ছিলেন। ২০১০ সালে তৃণমূল দ্বিতীয় বার কলকাতা পুরসভা দখল করলে মেয়র হন শোভন। ২০১১ সালের বেহালা পূর্ব থেকে জিতে প্রথম বার বিধায়ক হলেও, তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি। কিন্তু ২০১৬ সালে শোভন দ্বিতীয় বার বিধানসভায় জিতলে তাঁকে আবাসন এবং দমকল দফতরের মন্ত্রী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ২০১৮ সালে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মেয়র এবং মন্ত্রী দুই পদ থেকেই ইস্তফা দেন শোভন। সেই সময় বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে তড়িঘড়ি পুর আইন সংশোধন করে মেয়র পদে বসানো হয় ফিরহাদকে। সেই থেকেই তিনি ওই পদে রয়ে গিয়েছেন।