দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- সাদা-নীল বনাম গেরুয়া যুদ্ধে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে, এই অভিযোগে বার বার সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। এবার সেই রং বিতর্কের মাঝে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর চিঠিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় |আবেদন জানালেন, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে বাংলার জন্য বরাদ্দ টাকা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া হোক। নইলে প্রকল্প চালাতে অসুবিধা হচ্ছে।জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের আর্থিক বরাদ্দ থেকে যে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও অন্যান্য পরিকাঠামো তৈরি হবে, সেগুলিতে একটি নির্দিষ্ট রঙের ‘ব্র্যান্ডিং’ করার গাইডলাইন রয়েছে। অন্যান্য সব গাইডলাইন পূরণ হলেও শুধুমাত্র রঙের গাইডলাইনের জন্য জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকা আটকানো হচ্ছে বলে অভিযোগ মমতার। এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ দাবি করে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।মোদীকে পাঠানো দু’পাতার চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, গত ১২ বছর ধরে জনস্বাস্থ্য পরিষেবায় বাজেট বরাদ্দ ভীষণভাবে বাড়ানো হয়েছে রাজ্যে। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসাথী, শিশুসাথী, চোখের আলো-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের কথাও লিখেছেন তিনি। এমনকী বিভিন্ন জনস্বাস্থ্য কর্মসূচিতে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও পশ্চিমবঙ্গ সামনের সারিতে, সে কথাও উল্লেখ করেছেন মমতা।
চিঠিতে মমতার দাবি, রাজ্যের প্রায় ১১ হাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রতিদিন তিন লাখেরও বেশি মানুষ উপকৃত হন। ২০১১ সাল থেকে রাজ্যের নিজস্ব ‘কালার ব্র্যান্ডিং’ অনুযায়ী এই ভবনগুলি তৈরি করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, বাংলার তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন সরকারি ভবনকে নীল-সাদা রঙ করা হয়েছে।মমতার বক্তব্য, “আমার কাছে খবর এসেছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির জন্য কিছু কালার ব্র্যান্ডিং গাইউলাইন না মানার কারণে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের বরাদ্দ আটকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অন্য সব গাইডলাইন মেনে চলা হয়েছে। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক।” চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, এই টাকা আটকে গেলে গরিব-প্রান্তিক মানুষরা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনগুলি নতুন করে ‘কালার ব্র্যান্ডিং’ অনুযায়ী রং করতে গেলে প্রচুর টাকা খরচ হবে। এমন অবস্থায়, প্রধানমন্ত্রী যাতে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন, সেই দাবি জানিয়েছেন মমতা। তাঁর আরও দাবি, যাতে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের বরাদ্দ টাকা পাওয়ার শর্তের তালিকা থাকে ‘কালার ব্র্যান্ডিং’-এর নির্দিষ্ট শর্তটি সরিয়ে দেওয়া হয়।