দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা মামলায় তদন্ত প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ। আগামী ১৭ জানুয়ারি স্থগিতাদেশ জারির নির্দেশ বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। আগামী ১০ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।বৃহস্পতিবারের শুনানিতে গত ২৯ নভেম্বরের বিধানসভায় ধরনা কর্মসূচির ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, “যে ক্যামেরার ফুটেজ আমি দেখতে পাচ্ছি সেখানে শুধু শাসকদলের ফুটেজ দেখতে পাচ্ছি। আর কারও জমায়েত দেখতে পাচ্ছি না। তাহলে বিজেপি বিধায়করা জাতীয় সঙ্গীত শুনতে পাবেন কী করে?” রাজ্যের সওয়াল, “ওটা অন্য ক্যামেরায় আছে।”এদিন আদালতে সেদিনের ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ পেশ করে রাজ্য। সেই ফুটেজ নিজের ল্যাপটপে দেখেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। এর পর তিনি বলেন, এই ফুটেজে তো শুধুমাত্র তৃণমূল বিধায়কদে দেখা যাচ্ছে। বিজেপি বিধায়করা কোথায়? তখন সরকারি আইনজীবী বলেন, বিজেপি বিধায়কদের ছবি অন্য ক্যামেরায় রয়েছে। তখন বিচারপতি সেই ছবি দেখতে চান। কিন্তু সেই ছবি শুনানি চলাকালীন দেখাতে পারেনি রাজ্য। বিচারপতি বলেন, যখন এক ক্যামেরায় দুপক্ষকে দেখাই যাচ্ছে না তখন বুঝব কী করে যে তারা কত দূরে অবস্থান করছিল? তাছাড়া দুপক্ষ নিজেদের কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন। হতে পারে তাঁরা নিজেদের কর্মসূচিতে নিবিষ্ট থাকায় জাতীয় সংগীত শুনতে পাননি। জাতীয় সংগীত গাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম না মেনে জাতীয় সংগীত গাওয়া অনুচিত হয়েছে। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কোনও বাড়িতে কোনও অনুষ্ঠানে হঠাৎ জাতীয় সংগীত গাওয়া হলে পাশের বাড়িতে বিছানায় শুয়ে থাকা বৃদ্ধকে কি উঠে দাঁড়াতে হবে? তিনি বলেন, জাতীয় সংগীতকে এখানে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে হেনস্থা করা যায়। জাতীয় সংগীত কি দেশের প্রতি শ্রদ্ধা থেকে গাওয়া হয়েছিল, না কি অপরপক্ষের কর্মসূচিকে বাধা দিতে গাওয়া হয়? বিচারপতি বলেন, দেশের একজন সৈনিকের বাড়ি দখলের চেষ্টা চলছে। তাঁর মাকে পুড়িয়ে মারতে চাইছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশের তাঁর অভিযোগ গ্রহণের সময় নেই আর এসব আজে বাজে মামলা করার সময় রয়েছে।এরপর এ ব্যাপারে দুপক্ষকে হলফনামা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। একই সঙ্গে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত এই মামলার তদন্তে স্থগিতাদেশ জারি করেছেন তিনি। ১০ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।