দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- ২০২৪ সালের প্রথম দিনেই দীর্ঘক্ষণ বিকল থাকল কলকাতা মেট্রোয় টোকেন দেওয়ার ব্যবস্থা। এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার হয়ে গেল এখনও ডিজিটাল ইন্ডিয়া গড়ে ওঠেনি। যতই স্মার্ট কার্ড, ডিজিটাল টোকেন ব্যবস্থা করা হোক না কেন মানুষ এখনও তা রপ্ত করে উঠতে পারেনি। তবে এই টোকেন বিভ্রাটের জেরে একযোগে মেট্রোর তিনটি লাইনেই—উত্তর দক্ষিণ, ইস্ট–ওয়েস্ট এবং জোকা–তারাতলা রুটে মারাত্মক বিপত্তির মধ্যে পড়েন একাধিক যাত্রী। টানা পাঁচ ঘণ্টা ধরে এই সমস্যা চলেছে বলে অভিযোগ।যাত্রীদের বক্তব্য, যারা এদিন কলকাতায় বেড়াতে বা বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য এসেছিলেন, তাঁদের বেশিরভাগই নিত্যযাত্রী নন। তাঁরা এসেছিলেন বিভিন্ন জেলা থেকে। অনেকে এসেছিলেন শুধু মেট্রোয় প্রথম চড়ার শখ পূরণ করতে। কিন্তু মেট্রো কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বছরের প্রথম দিন তাঁদের নাস্তানাবুদ হতে হল। যাত্রীদের বক্তব্য, একদিনের জন্য তাঁরা স্মার্ট কার্ড কেন কিনবেন? আর কিউআর কোডের মাধ্যমে ই-টিকিট কাটতে জানেন কতজন? এমনিতেই সমস্ত স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে মেট্রো। যে কারণে টোকেন পেতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয় যাত্রীদের। কিন্তু সে দুর্ভোগ তো নিত্য রুটিন হয়ে গিয়েছে। এদিন উৎসবের দিনে সব দুর্ভোগই যেন তুচ্ছ মনে হয়েছে। শুধু উত্তর-দক্ষিণ কলকাতা মেট্রোই নয়। ইস্ট-ওয়েস্ট এবং জোকা-তারাতলা মেট্রোপথেও সোমবার টোকেন দেওয়া যায়নি ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এদিন বিকেলে তখন বেলগাছিয়া মেট্রো স্টেশনে থিকথিকে ভিড়।
তার মধ্যেই এক ব্যক্তি কবি সুভাষগামী চলন্ত মেট্রোর সামনে ঝাঁপ দিতে যান। গেল গেল রব ওঠে। যদিও স্টেশনে থাকা আরপিএফ কর্মীরা ধরে ফেলেন শেষমুহূর্তে। কিছুক্ষণের জন্য আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে যাত্রীদের মধ্যে। অন্যদিকে দমদম স্টেশনে লোকাল ট্রেন থেকে নেমে মেট্রো ধরতে আসা যাত্রীদের ভিড়ে স্টেশন চত্বরে লোকে লোকারণ্য অবস্থা হয়ে যায়। প্রত্যেক টিকিট কাউন্টারের সামনে বিরাট লাইন পড়ে যায়। তবে যাত্রীরা ছুটির আবহ থাকায় কেউই বিক্ষোভ দেখাননি। সকালে স্টেশনের বুকিং কাউন্টার খুলতেই মেট্রো কর্মীরা দেখেন, কাউন্টারে যন্ত্র এবং স্টেশনে বসানো স্বয়ংক্রিয় ভেন্ডিং মেশিন থেকে নির্দিষ্ট তারিখ ও দামের টোকেন বেরোচ্ছে না। টোকেন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ মুখ থুবড়ে পড়ে। তখন থেকেই কাগজের টিকিট চালু করা হয়।মেট্রো সূত্রে খবর, আরএফআইডি প্রযুক্তির সাহায্যে টোকেনগুলিতে দূরত্ব ও দামের তথ্য ভরে দেওয়া থাকে সফটওয়্যারে। তাতেই বিভ্রাট দেখা দেয়। সাল ২০২৩ থেকে ২০২৪ হওয়ায় সেখানে তারিখ সংক্রান্ত বিভ্রাট ঘটে। এই পরিস্থিতির খবর পেয়ে দায়িত্বে থাকা সেন্টার ফর রেলওয়ে ইনফরমেশন সিস্টেমের অফিসাররা কাজে নামেন। এই বিষয়ে মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বিবৃতিতে বলেন, ‘সফটওয়্যার বিভ্রাটে মেট্রোর তিনটি লাইনেই টোকেন দেওয়া নিয়ে সমস্যা হয়। সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে ওই সমস্যা মেটে।’
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal