প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- ধৃত শেখ শাহজাহানকে কলকাতার ভবানী ভবনে রাজ্য পুলিশের সদর দফতরে নিয়ে এল পুলিশবাহিনী। বসিরহাট আদালত থেকে সরাসরি সন্দেশখালিকাণ্ডে ধৃত তৃণমূল নেতাকে ভবানী ভবনে নিয়ে আসা হয়। সংবাদমাধ্যমের চোখে ধুলো দিয়ে বসিরহাট থেকে বেরিয়ে বাসন্তী হাইওয়ে ধরে ঘটকপুকুর, ভোজেরহাট পেরিয়ে সায়েন্স সিটি পেরিয়ে শাহজাহানকে কলকাতায় নিয়ে এসেছে পুলিশ। যেভাবে তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে, ওই পরিকল্পনা আগে থেকেই করা ছিল। গোটা রাস্তা কার্যত যানবাহন শূন্য করে দেওয়া হয়েছিল। একপ্রকার ‘গ্রিন করিডর’ গড়ে বিনা হইচইয়ে শাহজাহানকে নিয়ে ভবানী ভবনে পৌঁছয় রাজ্যপুলিশ। আগামী ১০ দিন তাঁকে সেখানেই রাখা হবে। সেখানেই তাঁকে দফায় দফায় জেরা করবেন রাজ্যপুলিশের পদস্থ অফিসারেরা।
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর পুলিশ হেফাজতে সন্দেশখালির শেখ শাহাজাহান। গ্রেপ্তারির পরই বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ তৃণমূল নেতার আইনজীবী সব্যসাচী বন্দোপাধ্যায়। তাঁকে তীব্র ‘ভর্ৎসনা’ প্রধান বিচারপতির। তৃণমূল নেতার আইনজীবী সব্যসাচী বন্দোপাধ্যায় উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আপনার জন্যই আমরা অপেক্ষা করছিলাম।” শেখ শাহজাহানের আইনজীবী বলেন, “আগাম জামিনের আবেদন ২ দিন আগে খারিজ হয়েছে। নিম্ন আদালতে এখনও আমার চারটি আবেদন বিচারাধীন আছে। গতকাল মামলার কথা আমরা জানতাম না।” প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, “৪৩টা মামলাও আছে।” ভর্ৎসনার সুরে প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, “আগামী ১০ বছর আপনাকে খুব ব্যস্ত থাকতে হবে। এই মক্কেলের অনেক কাজ করতে ব্যস্ত থাকতে হবে। ৪-৫ জন জুনিয়র রাখতে হবে।” শেষে তিনি বলেন, “এই ব্যক্তির জন্য আমার কোন সমবেদনা নেই।” এর পরই মামলা ফিরিয়ে দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।সূত্রের খবর, আগামী ১০ দিন শাহজাহানকে নাকি ভবানীভবনে রাখা হবে। সেখানে সিআইডির পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদেরও অফিস রয়েছেন। জানা গিয়েছে, সিআইডির পাশাপাশি পুলিশ কর্তারাও জেরা করবেন।বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি যখন সেই মন্তব্য করেন, সেটার কয়েক ঘণ্টা আগেই শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত রাতে উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁর বামনপুকুর থেকে তাঁকে ধরা হয়েছে বলে দাবি করেছে রাজ্য পুলিশ। অর্থাৎ ৫৫ দিন ‘নিখোঁজ’ থাকার পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সূত্রের খবর, মিনাখাঁ থানায় তাঁকে জেরা করা হয়। সেইসময় ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনায় নিজের দোষ কবুল করে নিয়েছেন সন্দেশখালির ‘বাঘ’। সেটার ভিত্তিতেই তাঁকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। ১৪ দিনের জন্য হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানায় পুলিশ। শেষপর্যন্ত শাহজাহানকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছেন বসিরহাট মহকুমা আদালতের বিচারক। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন শেখ শাহজাহানের আইনজীবী সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায়।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal