প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- গার্ডেনরিচের ফতেপুর ব্যানার্জি বাগান লেনে যেখানে নির্মীয়মাণ বহুতলটি ভেঙে পড়েছে, সেই এলাকা পরিদর্শন করেন রাজ্যপাল,কথা বলেন বাসিন্দাদের সঙ্গে। বেশ কিছুক্ষণ সেখানে ছিলেন তিনি। সেখান থেকে আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখান থেকে বেরিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, “এটা অ্যাক্সিডেন্ট নয়, হিউম্যান ফেলিওর।” তাঁর দাবি, সব দুর্ঘটনার পিছনেই হিউম্যান ফেলিওর থাকে। যারা দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছেন তারা কেউ এর জন্য দায়ী নন। বিল্ডার অন্যায় করেছেন। যাদের দেখার দায়িত্ব সেই সুপারভাইজারদের গাফিলতি সব থেকে বেশি। রাজ্যপাল জানান, রাজভবনে এক্সপার্ট কমিটি মিটিং ডাকবেন তিনি। আইআইআইটি খড়গপুরের বিশেষজ্ঞরা থাকবেন টিমে।রাজ্যপাল বলেন, “শীঘ্রই রাজভবনে নির্মাণ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বৈঠক হবে। আইআইটি খড়গপুর, হাডকো, সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউ-সহ একাধিক সংস্থা ও ক্রেডাইয়ের বিশেষজ্ঞদের থেকে পরামর্শ নেওয়া হবে। সেই বৈঠকের পরামর্শ সরকারকে দেওয়া হবে প্রয়োজনীয় অ্যাকশনের জন্য। হাসপাতালে আহত এবং তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি।” রাজভবনের তরফে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে নিহতদের পরিবারকে। রাজ্যপাল বোস বলেন, সোশ্যাল অডিট এসব বন্ধ করতে পারে।
রবিবার মাঝরাতে কলকাতার বুকে ঘটেছে বড়সড় দুর্ঘটনা। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে প্রাণহানি হয়েছে ৯ জনের। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। কারণ, ভেঙে পড়া বহুতলের নিচে এখনও অনেকে আটকে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৫। রাতভর চলেছে উদ্ধারকাজ। রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজে দাঁড়িয়ে থেকে উদ্ধারকাজের তদারকি করেছেন। সঙ্গে ছিলেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুও।
অবৈধ বহুতল নির্মাণ নিয়ে এর আগে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তা সত্ত্বেও তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রে বহুতল বিপর্যয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে কলকাতা পুরসভা। এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবাদিত্য পাল, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দেবব্রত ঘোষ এবং সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার শুভম ভট্টাচার্যকে শোকজ করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিতে হবে জবাব। উত্তর সন্তোষজনক না হলে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও খবর। কলকাতা পুরসভার নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, এবার থেকে সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়াররা অফিসে আসার পরই ফ্ল্যাট পরিদর্শনে বেরবেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে বেআইনি বাড়ির দিকে খেয়াল রাখবেন। কোনও অনিয়ম হলে প্রাথমিক অবস্থাতেই ভেঙে দেওয়া হবে অবৈধ নির্মাণ।