দেবরীনা মণ্ডল সাহা,কলকাতা :- বরাহনগরের বাসিন্দা উত্তম কুমার ঠাকুর পেশায় একজন বাস কন্ডাক্টর। সিএসটিসির বরাহনগর কাশীপুর ডিপোতে কর্মরত ছিলেন। ২০০৫ সালের এক সকালে বাসের প্রথম যাত্রীকে টাকা খুচরো টাকা দেওয়ার জন্য বাসের চালকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা খুচরো করেন তিনি। কিছুদূর বাস যাওয়ার পর মাঝ পথে সিএসটিসির কর্তব্যরত আধিকারিকরা চেকিংয়ের জন্য বাসে ওঠেন। এবং আধিকারিকরা ২২৫ টাকা ক্যাশ বাক্সে বেশি পান তারা। কেন এই টাকা টিকিট বিক্রির থেকে বেশি হল উত্তম বাবুর কাছ থেকে জানাতে চেয়েছিলেন। উত্তমবাবু তাদের জানিয়েছিলেন ৫০০ টাকা ড্রাইভারের কাছ থেকে খুচরো নিয়েছিলেন। সেই কথা মানেননি সিএসটিসির আধিকারিকরা।তাঁকে শোকজের পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বিভাগীয় তদন্তের সময় তৎকালীন সেই বাসচালককে কোনওরকম জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি বলেই অভিযোগ। এদিকে উত্তমবাবুকে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁর বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়।একতরফাভাবে উত্তমবাবুকে শুধু দোষী সাব্যস্তই নয় তার বেতন কমিয়ে দেওয়া হয় এবং তার সমস্ত বৈধ ভাতা বন্ধ করে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।সিএসটিসির চেয়ারম্যানের কাছে অ্যাপিল করেন উত্তমবাবু। কিন্তু চেয়ারম্যান বা তার দফতর উত্তমবাবুর আপিল আবেদন শুনানি না করেই বিষয়টি দীর্ঘদিন ফেলে রাখেন বলে অভিযোগ। এরপরেই ২০০৬ সালে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন উত্তমবাবু। হাইকোর্টের নির্দেশেই সিএসটিসির অ্যাপিলেট সাইড উত্তমবাবুর বিরুদ্ধে সিএসটিসির আধিকারিকদের যে নির্দেশ সেটাই বহাল রেখেছিল অ্যাফিলিয়েট সাইড। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই পুনরায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন উত্তম বাবু।বিচারপতি পার্থসারথী চ্যাটার্জী নির্দেশ দেন উত্তম কুমার ঠাকুরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বেআইনি বলে খারিজ করে দেন। পাশাপাশি তার যে ২০০৫ সাল থেকে বেতনের ১৫০০০ টাকা কম দেওয়া হচ্ছিল তা অবিলম্বে আগের বেতন পরিকাঠামোয় ফিরিয়ে দিতে হবে। এবং তিনি যে বর্ধিত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন এতদিন তা ৩ মাসের মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি।