প্রসেনজিৎ ধর,কলকাতা :-প্রথমে বন্ধুত্ব, তারপর তার সুযোগ নিয়ে খাস কলকাতায় চুরির ঘটনা | পুলিশের জালে মহারাষ্ট্রের মা-মেয়ে | গড়পার রোডের এক দম্পতির প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকার গয়না ও নগদ ৭৯ হাজার টাকা চুরি করেন ওই মা ও মেয়ে | নিজেদের টাকা ও গহনা চুরি গিয়েছে বুঝতে পেরে গত ১৩ মার্চ নারকেলডাঙা থানায় অভিযোগ জানান গড়পার রোডের দম্পতি | সেই চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে পালঘরের একটি আবাসন থেকে অভিযুক্ত মা-মেয়েকে গ্রেপ্তার করেন নারকেলডাঙার পুলিশ আধিকারিকরা | ট্রানজিট রিমান্ডে দুজনকে কলকাতায় আনা হয়েছে| ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত | পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুম্বই বেড়াতে গিয়ে অভিযোগকারী দম্পতির সঙ্গে আলাপ হয় মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা পাপিয়া এবং অনুষ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়ের | আলাপ গড়ায় বন্ধুত্বে,এতটাই যে কলকাতায় এলে অভিযোগকারিণীর বাড়িতেই উঠতেন অভিযুক্ত মা-মেয়ে | এর মাঝেই ওই দম্পতিকে নেটব্যাঙ্কিং-এর পদ্ধতি শিখিয়েছিলেন তারা | যার ফলে তার লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড জানতেন পাপিয়া ও অনুষ্কা | মার্চ মাসে অভিযোগকারী পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন মা-মেয়ে| ৯ মার্চ সকালে ফিরেও যান তারা | এরপরই ওই দম্পতি বুঝতে পারেন তাঁদের সাড়ে চার লক্ষ টাকার সোনার গয়না এবং মোবাইল ফোন উধাও |এমনকী ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকেও গায়েব ৭৯ হাজার টাকা | তদন্তে নেমে দুই অভিযুক্তের মোবাইল ফোন সুইচ অফ পায় পুলিশ | অবশেষে পাপিয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বিশ্লেষণ করে একটি নম্বর পাকাপাকিভাবে হাতে আসে তদন্তকারীদের | অভিযুক্ত অনলাইনে জিনিস কিনতে এই নম্বর ব্যবহার করে | দেখা যায়, এই অ্যাকাউন্টেই অভিযোগকারিণীর অ্যাকাউন্ট থেকে চালান করা হয়েছিল ৭৯ হাজার টাকা |
পাপিয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বিশ্লেষণ করে এও জানা যায়, অন্য আরেকটি অ্যাকাউন্ট থেকে এই অ্যাকাউন্টে চোরাই গয়না লেনদেনের টাকাও জমা পড়েছে | নারকেলডাঙা থানার অফিসাররা, মা-মেয়ের সন্ধান পান মুম্বই থেকে প্রায় ১০০ কিমি দূরে মহারাষ্ট্রের পালঘর শহরের একটি আবাসিক সোসাইটিতে | থানা থেকে সার্জেন্ট সৈয়দ কাসিম রাজা, সাব-ইনস্পেকটর গৌরব ভট্টাচার্য, এবং কনস্টেবল মৌমিতা সিংহ ও সুশীল রায় রওনা দেন পালঘরের উদ্দেশে | আবাসিক সোসাইটিতে হানা দিয়ে ২৬ মার্চ তাঁরা গ্রেফতার করেন পাপিয়া ও অনুষ্কাকে | দুজনের কাছ থেকে উদ্ধার হয় কিছু খালি গয়নার বাক্স এবং চোরাই মোবাইল ফোন | কিছু গয়না যে তাঁরা হুগলীর এক ক্রেতাকে বিক্রি করেছেন, সেকথা স্বীকার করেন দুজনেই | ট্রানজিট ওয়ারেন্ট-এ দুজনকে কলকাতায় আনা হয়েছে, ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে আছেন তাঁরা | ওদিকে হুগলীর রিষড়ায় এক গয়নার দোকান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কিছু গয়না এবং ২১ গ্রামের বেশি গলানো সোনা | এছাড়াও উদ্ধার করা গেছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া ৭৯ হাজার টাকাও |