নিজস্ব সংবাদদাতা :- কয়েক বছরে তহবিল তছরুপ প্রতিরোধ আইন বা পিএমএলএ-র ১৯ নম্বর ধারার অধীনে, একের পর এক গ্রেফতার করেছে এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। এদিন, শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এই ধারার অধীনে চাইলেই গ্রেফতার করতে পারবে না ইডি। যদি, এক বিশেষ আদালতের সমন পেয়ে অভিযুক্ত আদালতে হাজিরা দেয়, সেই ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে গেলে, ইডিকে প্রথমে সেই আদালতের অনুমোদন চাইতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জল ভয়ানের এক বেঞ্চ বলেছে, “অপরাধটি আদালতের আওতায় আসার পর, অভিযোগপত্রে যাকে অভিযুক্ত হিসাবে দেখানো হয়েছে, সেই ব্যক্তিকে পিএমএল-এর ১৯ নম্বর ধারার অধীনে গ্রেফতার করার ক্ষমতা থাকে না ইডি এবং তার আধিকারিকদের।”সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ইডি যদি এই ধরনের কোনও অভিযুক্তের হেফাজত চায়, তবে তাদের বিশেষ আদালতে আবেদন করতে হবে। সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের আইনের ৪৫ ধারা অনুযায়ী জামিন চেয়ে জামিনের শর্ত পূরণ করার প্রয়োজন নেই।আদালত জানিয়েছে, এই আইনের ৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী জামিন পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। কারণ এক্ষেত্রে বিচারককে ধরে নিতে হয় অভিযুক্ত এই অপরাধ করেননি এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ তিনি করবেন না। যা অত্যন্ত কঠিন একটি বিষয়। জনৈক তারসেম লাল বনাম ইডি মামলায় বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঁইয়ার বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে।
ওই রায়ে বলা হয়েছে, “সংশ্লিষ্ট আইনের ৪৪ ধারায় কোনও একটি অভিযোগের ভিত্তিতে পিএমএলএ-এর ধারা ৪ এর অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধের স্বীকৃতি নেওয়ার পরে, অভিযুক্ত হিসাবে দেখানো ব্যক্তিকে ১৯ নম্বর ধারায় গ্রেফতার করার ক্ষমতা ইডির নেই।” আরও বলা হয়েছে, অভিযোগ দায়ের না হওয়া পর্যন্ত ইডি যদি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে না করে থাকে, তবে বিশেষ আদালত মামলায় স্বীকৃতি নেওয়ার সময় অভিযুক্তকে সমন জারি করতে পারবে। ওয়ারেন্ট নয়।আসামি জামিনে থাকলেও সমন জারি করতে হবে।অর্থ তছরুপ মামলায় কোন অভিযুক্ত আদালতের সমন পেয়ে আদালতে হাজির হলে তাকে জামিনের আবেদন করতে হবে না। অর্থাৎ এমনটা ধরে নেওয়া যাবে না যে তিনি হেফাজতে রয়েছেন। ইডি তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইলে আদালতে উপযুক্ত কারণ দর্শাতে হবে।গত কয়েক বছরে ইডির বিরুদ্ধে বারবারই পিএমএলএ আইনের বলে বলিয়ান হয়ে নির্বিচারে গ্রেফতার করার অভিযোগ উঠেছে। আদালতের এদিনের রায়, ইডির এই ধরনের পদক্ষেপ থেকে অভিযুক্তদের সুরক্ষা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইডি যাতে নির্বিচারে গ্রেফতার না করতে পারে, তার জন্যই শীর্ষ আদালত এই রায় দিল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।