দেবরীনা মণ্ডল সাহা :- বঙ্গোপসাগরে ক্রমেই তৈরি হচ্ছে ‘রেমাল’-এর অনুকূল পরিস্থিতি। শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে আবহবিদদের আশঙ্কা। যার জেরে দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস আগে থেকেই ছিল। শনিবার দুপুরে আবহাওয়া দফতর জানাল, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার মধ্যে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের আটটি জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টি হতে পারে।কলকাতা ছাড়া আর যে জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে সেগুলি হল, দুই ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং নদিয়া। এই আট জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পাশাপাশি ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়াও বইতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া দফতর এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সব রকম ভাবে প্রস্তুত থাকছে নবান্ন। শুক্রবার এ নিয়ে দিল্লির ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটির সঙ্গে একটি জরুরি বৈঠক হয়। ভিডিও কন্ফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে হওয়া এই বৈঠকে ছিলেন রাজ্য মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা। দুর্যোগে সাধারণ মানুষকে নিরাপদে রাখতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সে ব্যপারের বিস্তারিত জানান মুখ্যসচিব। এই বৈঠকের সভাপতিত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা।বৈঠকে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন জেলাগুলিতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। খাদ্যসামগ্রী এবং ওষুধ-সহ সমস্ত জরুরি সামগ্রী পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগের সময় আশ্রয়ে প্রয়োজন হতে পারে, সেজন্য পর্যাপ্ত সংখ্যায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় দেওয়ার স্থান। এছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতেও রাজ্য ইতিমধ্যে পদক্ষেপ করেছে বলে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন। এর সঙ্গে পরমার্শ দেওয়া হয়েছে, ওই সময় মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না-যাওয়ার জন্য। বৈঠকে ক্যাবিনেট সচিব আশ্বাস দেন দুর্যোগ মোকাবিলায় রাজ্যের পাশে থাকবে কেন্দ্র। যৌথভাবে দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য হবে, মৃত্যু-সহ সবরকম বিপর্যয় রুখে দেওয়া। মানুষের সম্পত্তি এবং পরিকাঠামোয় সবরকম ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করা।’ ঝড়ে হোর্ডিং উড়ে গিয়ে যাতে কোনও রকম ক্ষতি না করতে পারে তার জন্য বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে | সচিব আশ্বাস দেন দুর্যোগ মোকাবিলায় কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলি সবরকম ভাবে রাজ্যকে সহযোগিতা করবে।বিদ্যুৎ, পূর্ত, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, পরিবহণ, শিক্ষা, কৃষি-সহ বিভিন্ন দপ্তরকে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর। রাস্তাঘাট, জেটি, বন্দরের কোনও ক্ষতি হলে যাতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতি শুরু করতে বলা হয়েছে। কর্মীদের ছুটি বাতিল করল কলকাতা পুরসভা|জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১২ টি দলকে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া পাঁচটি দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যে কোনও পরিস্থিতে তারা যাতে ছুটে যেতে পারে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনীকেও। নিয়মিত আবহাওয়া দফরের সঙ্গে যোগযোগ রেখে চলা হচ্ছে বলে মুখ্যসচিব জানান কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিবকে।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal